

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার প্রতিক্রীয়ায় এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুসের পদত্যাগের দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মশাল মিছিল ও আগুন দিয়ে নাশকতার চেষ্টা করার, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাতে সদর থানার এসআই মো. রমজান আলী সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে তিনি একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন: ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গোয়ালপাড়া এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে মো. মানিক (৪০), মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে সামিউল ইসলাম সুমন (৩৭), ভুল্লী কুমারপুর এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে মনোয়ার হোসেন (২৪), সরকারপাড়া এলাকার ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গনি (৩৪), গোয়ালপাড়া শাপলা স্কুল এলাকার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে ছোট রাজু, সেলিম মিয়ার ছেলে সাধন মিয়া (৩২), হাসান আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩৫), মৃত মমতাজ আলীর ছেলে বড় রাজু (৩৬), শাহজাহান আলীর ছেলে নাঈম (২৪), মৃত আফিজ উদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৯), সিরাজুল ইসলামের ছেলে সৌরভ আলী (২৮), সরকারপাড়া এলাকার মহির উদ্দিন (৩০), আলী আকবরের ছেলে খায়রুল ইসলাম (৩৬), বসিরপাড়া এলাকার গান্ডু রফিক (৩০), গোয়ালপাড়া এলাকার ফারুক মিয়া, বড় খোচাবাড়ি এলাকার মৃত গোবর ধন শর্মার ছেলে দেবেশ চন্দ্র শর্মা (৪৮), গোয়ালপাড়া এলাকার মো. আব্দুল আউয়াল (৩২) এবং বড় খোচাবাড়ি এলাকার ভেলু ঘোষের ছেলে ভানু ঘোষ (৪৫)।
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) মধ্য রাতের দিকে পৌর শহরের গোয়ালপাড়া বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ের প্রতিবাদে হাতে রামদা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে মশাল মিছিল করেন। এবং আগুন জ্বালীয়ে নাশকতার চেষ্টা করে এসময় তারা রাষ্ট্রবিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে জনমনে ভয়ভীতি সৃষ্টি করেন।
পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে আসামিদের ফেলে যাওয়া লোহার তৈরি কাঠের হাতল, রামদা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি জব্দ করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩)'র ধারা ৬(২)(ক)(আ)(ঈ)/৮/৯(১)(২)/১০/১১/১২/১৩ অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোমবার বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ (নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন) নেতা-কর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায়ের প্রতিবাদে জনমনে ভয়ভীতি সৃষ্টি করাসহ জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে হাতে রামদা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে মশাল মিছিল করেন। এসময় তারা ইট-পাটকেল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মো. সরোয়ারে আলম খান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাতে মশাল মিছিল বের করেন। সেখানে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগানসহ এমন আচরণ দেখা গেছে, যা আইনশৃঙ্খলার জন্য সরাসরি হুমকি। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল তা স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার অধীনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, রাতে অনুমতি ছাড়া মশাল মিছিল বের করা এবং সেখানে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ করেছে। পুরো ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছি। কোনো ধরনের উস্কানি, সহিংসতা বা আইনভঙ্গের সুযোগ দেয়া হবে না। জনগণের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে।
মন্তব্য করুন