

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত ভূমিকম্পটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে ধরা হচ্ছে।
নরসিংদীর মাধবদীতে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেলে।
পরের দিন একই এলাকায় আরও কম মাত্রার ভূমিকম্প (৩.৩ রিখটার) রেকর্ড করা হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট-বড় কম্পন আরও কয়েকবার অনুভূত হয়েছে। ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, এ ধরনের ভূমিকম্পের পেছনে মূল কারণ হলো দেশের নিচে থাকা তিনটি বড় প্লেট ও ছয়টি সক্রিয় ফল্ট।
বাংলাদেশের মূল প্লেটসমূহ
১. ইন্ডিয়ান প্লেট: দেশের পূর্ব-উত্তর অংশে অবস্থান, উত্তরে ইউরেশিয়ান ও পূর্বে বার্মা প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়।
২. ইউরেশিয়ান প্লেট: হিমালয় অঞ্চলের নিচে, উত্তরে, ইন্ডিয়ান প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে হিমালয় ও উত্তরাঞ্চলে ভূমিকম্প হয়।
৩. বার্মা প্লেট: বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের দিকে, এখানে বিপজ্জনক ইন্দো-বার্মা মেগাথ্রাস্ট রয়েছে।
প্রধান সক্রিয় ফল্টসমূহ
১. ডাউকি ফল্ট: সিলেট ও মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। বড় ঝুঁকি: রিখটার স্কেলে ৭–৮। প্রভাবিত জেলা: সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার।
২. মধুপুর ফল্ট: টাঙ্গাইল–ময়মনসিংহ–গাজীপুর অঞ্চলের পশ্চিমে। ঝুঁকি: এম ৬.৫–৭। প্রভাবিত জেলা: টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, শেরপুর, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা।
৩. চট্টগ্রাম ফোল্ড বেল্ট ফল্ট: পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। প্রভাবিত জেলা: চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার।
৪. ইন্দো-বার্মা মেগাথ্রাস্ট: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পূর্বে।
ঝুঁকি: এম ৮.৫ পর্যন্ত। প্রভাবিত জেলা: কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
৫. শিলং প্লাটো সীমান্ত ফল্ট: ভারতের শিলং-মেঘালয়ের উচ্চভূমি। প্রভাবিত জেলা: সিলেট, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ।
৬. তিস্তা ও প্লায়া-গঙ্গা লাইনামেন্ট: উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। প্রভাবিত জেলা: রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও।
ঝুঁকিপূর্ণ জেলা
অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকি: ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর
উচ্চ ঝুঁকি: মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, শেরপুর, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী
মাঝারি ঝুঁকি: রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল
বাংলাদেশে এই প্লেট ও ফল্টগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের জন্য মূলভাবে দায়ী। বিশেষ করে রাজধানী ও পার্বত্য অঞ্চলগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
মন্তব্য করুন
