রবিবার
২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধীরে ধীরে সরছে ভূ-প্লেট, ঝুঁকি বাড়ছে বাংলাদেশের

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
গ্রাফিক্স : এনপিবি
expand
গ্রাফিক্স : এনপিবি

গতকাল শুক্রবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুভূত হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের উত্তরে ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংযোগ এবং পূর্বে বার্মিজ ও ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে।

এই গতিশীল প্লেটগুলোর কারণে দেশের ভূখণ্ড ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানিয়েছেন, “বর্তমানে প্লেট বাউন্ডারিতে যে শক্তি লক অবস্থায় ছিল, তা ধীরে ধীরে ‘আনলকিং’ শুরু করছে। ঘন ঘন ছোট মাত্রার কম্পনগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ৮ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের জন্য যথেষ্ট শক্তি জমা আছে, যা যেকোনো সময় মুক্ত হতে পারে।”

দেশে কয়েক প্রজন্মের মানুষ ঢাকার কাছাকাছি বড় ভূমিকম্প দেখেনি। তবে গত ৩০০ বছরে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কিছু প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প ঘটেছিল:

১৭৬২ সালের ভূমিকম্প: টেকনাফ থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ৪০০ কিমি বিস্তৃত ফল্ট লাইনে কম্পন ছিল ৮.৫ মাত্রার। সেন্টমার্টিন দ্বীপ তিন মিটার উপরে উঠে আসে, বঙ্গোপসাগরে বিশাল ঢেউ তৈরি হয় এবং ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ বদলে যায়।

১৮৬৯ সালের কাচার আর্থকোয়াক: সিলেটের কাছে শিলচড়ে ৭.৫ মাত্রার কম্পন, শিলচড়, নওগাঁও ও ইম্ফল অঞ্চলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি।

১৮৮৫ সালের সাটুরিয়ার ভূমিকম্প: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় উৎপত্তিস্থল, ৭ মাত্রার কম্পন, ভারতের সিকিম থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত অনুভূত।

১৮৯৭ সালের গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক: মেঘালয়ের শিলং অঞ্চলে উৎপত্তিস্থল, ৮.৭ মাত্রার কম্পন, দেড় হাজারের বেশি প্রাণহানি।

১৯১৮ সালের ভূমিকম্প: শ্রীমঙ্গলের বালিছড়ায় উৎপত্তিস্থল, ৭.৬ মাত্রার কম্পন, শ্রীমঙ্গল ও ভারতের ত্রিপুরায় বড় ক্ষয়ক্ষতি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ কম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হলেও ঝুঁকির দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে। ইন্ডিয়ান-বার্মা প্লেট সংযোগস্থলে যে পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে, তা মুক্ত হলে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। সাবডাকশন জোনের ভূমিকম্পগুলো সাধারণত অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক হয়।

দেশের অবকাঠামো রাতারাতি উন্নত করা সম্ভব নয়। তাই একমাত্র কার্যকর পদক্ষেপ হলো মহড়া এবং সচেতনতা বৃদ্ধি। ভূমিকম্পের সময় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া এখন জরুরি।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন