বুধবার
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভিপি নুরের সম্পদ-হলফনামা প্রকাশ, বছরে আয় ২০ লাখ

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর
expand
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের আয়-ব্যয় ও সম্পদের বিস্তারিত চিত্র। হলফনামা অনুযায়ী, পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং তার ঘোষিত মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৯০ লাখ টাকা।

দাখিলকৃত তথ্যে দেখা যায়, নুরুল হক নুরের মোট সম্পদের মূল্য ৮৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৪১ টাকা। অপরদিকে তার স্ত্রী মারিয়া আক্তারের নামে রয়েছে ১২ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ টাকার সম্পদ। মারিয়া আক্তারের পেশা শিক্ষিকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে বর্তমানে ৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি তদন্ত পর্যায়ে এবং কয়েকটিতে তিনি অভিযুক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। তবে অতীতে দায়ের হওয়া ৮টি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে।

আয়ের বিবরণে দেখা যায়, ব্যবসা থেকে নুরের বার্ষিক আয় ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪২৬ টাকা। পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে আয় করেছেন আরও ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬২২ টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪০ হাজার ৪৮ টাকা।

সম্পদের খতিয়ানে নুরের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ ২৮ লাখ ৩৮ হাজার ২১৭ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা রয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩১৩ টাকা। এছাড়া কোম্পানি শেয়ারে বিনিয়োগ আছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য আমানতের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৩১১ টাকা।

তার স্ত্রী মারিয়া আক্তারের নগদ অর্থ ৩০ হাজার ৯৪১ টাকা এবং ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৭ টাকা। আসবাবপত্র হিসেবে তার নামে ১ লাখ টাকার সম্পদ দেখানো হয়েছে। হলফনামায় কোনো স্বর্ণালংকারের বিবরণ উল্লেখ করা হয়নি।

ভূমি সম্পদের ক্ষেত্রে নুরুল হক নুরের নামে রয়েছে ৮২ ডেসিমেল কৃষিজমি, যার অর্জনমূল্য মাত্র ৬২ হাজার টাকা। অপরদিকে তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৩ একর কৃষিজমি, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

দায়-দেনার অংশে উল্লেখ করা হয়, নুরের নামে পাওনাদারের কাছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৬০ টাকা দেনা রয়েছে। তবে তিনি কিংবা তার পরিবারের কেউ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেননি বলে হলফনামায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

হলফনামা অনুযায়ী, নুরুল হক নুর ও তার স্ত্রী—উভয়েই নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। পারিবারিক তথ্যে জানা যায়, নুরের তিন সন্তান রয়েছে—দুই মেয়ে ও এক ছেলে। এছাড়া তার ওপর নির্ভরশীল হিসেবে পিতা-মাতা, ভাই ও বোনের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসন থেকে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ২৯ ডিসেম্বর তিনি গলাচিপা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনের সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি এ আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। একই সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের আরেক নেতা শহিদুল ইসলাম ফাহিমও এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র যাচাই চলবে আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপিল গ্রহণ করা হবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি এবং নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২১ জানুয়ারি। প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X