

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার নুনেশ্বর ইউনিয়নের ১০২ নম্বর কাউপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দুই বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীন অনুপস্থিত। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১৫ জন হলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র তিনজন। প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফরিদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসছেন না। ২০২৪ সালে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার পর থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীও জানায়, “স্যার দুই বছর ধরে স্কুলে আসেন না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিটিপিটি প্রশিক্ষণ নিতে ছুটিতে যান রুহুল আমীন। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রশিক্ষণ শেষ হলেও তিনি এরপর আর বিদ্যালয়ে ফেরেননি। স্থানীয়দের দাবি, বিপুল পরিমাণ ঋণের চাপে তিনি এলাকায় মুখ দেখাতে পারছেন না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রুহুল আমীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মগোপনে আছেন। এমনকি সম্প্রতি তাঁর ভাই মারা গেলেও তিনি এলাকায় আসেননি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, বিনা অনুমতিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
আটপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, “রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট নিরসনের জন্য নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক পাঠানো হবে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আজম বলেন, “আমি বিষয়টি জানি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে অভিভাবক ও স্থানীয়দের প্রশ্ন—একজন সরকারি শিক্ষক দুই বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও কেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? তাদের অভিযোগ, শিক্ষা প্রশাসনের অবহেলার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের।
মন্তব্য করুন