

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে কুমারপুর ফেরিঘাট সড়কের সংযোগে নারিয়াপাড়া খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার পিসি গার্ডার সেতুটি দুই বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির মূল কাঠামোর কাজ সম্পন্ন হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ রোড) নির্মাণ। ফলে সেতুটি চালু করা তো দূরের কথা, বরং এলাকাবাসীর চলাচল আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আশপাশের ১২–১৪টি গ্রামের ১০–১২ হাজার মানুষের ইউনিয়ন পরিষদে আসা–যাওয়া, জেলা সদরে চিকিৎসা, কেনাকাটা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোর একমাত্র সহজ পথ ছিল এই সড়কটি। কিন্তু সেতুটি কার্যকর না হওয়ায় স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থী, নারী–পুরুষ, অসুস্থ রোগীসহ সবাইকে অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, “ব্রিজটা আমাদের উপকার তো করছেই না, বরং কষ্ট বাড়াইছে। ব্রিজ না থাকলে আগের মতো হেঁটে যাওয়া যেত। এখন সেতু রাখায় সেই পথটাও বন্ধ। তিন বছর ধরে দেখি শুধু অপেক্ষা, কিন্তু কোনো লাভ হয় না।”
নেত্রকোনা এলজিইডি সূত্র জানায়, ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জের এমএস মির্জা কনস্ট্রাকশন ও মামুন কনস্ট্রাকশন জেভিকে ২০২১ সালে কাজ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময় ২০২২ সালের আগস্টে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়। সেতুর কাঠামো শেষ হলেও সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় কাজ থেমে যায়।
এলজিইডির দাবি, প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাবে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কোনো বাজেট রাখা হয়নি। ফলে সংযোগ সড়ক নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যাচ্ছে না।
নেত্রকোনা সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোয়াইব ইমরান বলেন, “সেতুর সঙ্গে রাস্তা মিলাতে হলে উঁচু করে অ্যাপ্রোচ রোড করতে হবে। কাজ শুরুর আগে স্থানীয়রা জমি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে বলছেন, ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু প্রকল্পে এই বাজেট নেই। তাই কাজ আটকে আছে।”
অটোরিকশা চালক আব্দুল মালেক বলেন, “সরকার এত টাকা খরচ করে ব্রিজ বানাইলো, কিন্তু কোনো কাজই হচ্ছে না। কয়েক বছর ধরে ব্রিজের নিচ দিয়ে বাইপাস রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। ব্রিজ যেন উপকারের চেয়ে এখন ক্ষতির কারণ।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে ছিল না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জমির মালিকেরা জায়গা দিলে দ্রুতই সেতুটি চালু করা সম্ভব হবে। না হলে নতুন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কাজ করা যাচ্ছে না।”
এদিকে দীর্ঘদিন দুর্ভোগ পোহানো এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে বহুল প্রতীক্ষিত সেতুটিকে ব্যবহারযোগ্য করা হোক।
মন্তব্য করুন
