বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদা দাবি ও বিরোধ: আলিশান বাড়ি রেখে রাত কাটাচ্ছেন হোটেলে

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২০ পিএম
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দীন
expand
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দীন

কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নিজ গ্রামে চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেও সেখানে উঠতে পারছেন না কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দীন। পারিবারিক বিরোধ, চাঁদা দাবি এবং প্রাণনাশের হুমকির কারণে প্রতিদিন রাতে তাঁকে শহরের একটি হোটেলে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।

পরিবারের অভিযোগ, মহেশপুর (পালপাড়া) গ্রামের মৃত সৈয়দ আহমেদের বড় ছেলে গিয়াস উদ্দীন খরিদকৃত ও পৈতৃক মিলে মোট ৩৩ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ১৬ শতকে চারতলা ভবন নির্মাণ করেছেন। কিন্তু একই দাগে থাকা ২৪ শতকের মধ্যে তাঁর ছোট ভাই মামুনুর রশিদ ১২ শতক দখলে পাওয়ার কথা থাকলেও দখল নিয়েছেন সাড়ে ১৬ শতক—এতে গিয়াস উদ্দীন প্রায় সাড়ে ৪ শতক জমি কম পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গিয়াস উদ্দীন জানান, দুই মেয়ের ইচ্ছায় ভবনের নিচতলায় দাদা–দাদির নামে একটি হেফজখানা প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দিলে ছোট ভাই মামুনুর রশিদের প্ররোচনায় চাচাতো ভাই মফিজ, ফারুক, আজাদ, আবুল খায়ের ও জসীম এসে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে তাঁরা ২৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে হত্যা করে গোমতী নদীতে লাশ ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘হুমকি-ধমকির মামলাও (১০৭/১১৭) চলছে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে পরিবারকে নিয়ে ঢাকায় থাকছি। গ্রামে এলেও রাত কাটাতে হয় হোটেলে। সম্প্রতি বাড়ির একটি অংশ ও অন্যত্র নাল জমি বিক্রি করতে গেলে প্রতিপক্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে দাবি করে সাইনবোর্ড টাঙায়। তবে গিয়াস উদ্দীনের দাবি, যে রিট পিটিশনের (নং ৪২৩/২০২৫) কথা বলা হচ্ছে, তা তাঁর জমির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।’

অভিযোগের বিষয়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি নামাজে আছেন বলে পরে কথা বলার কথা জানান। এরপর একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি।

অভিযুক্তদের একজন চাচাতো ভাই ফারুক বলেন, দুই বছর ধরে গিয়াসের সঙ্গে দেখা নেই। উল্টো হয়রানি করতে আমাদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে, কিন্তু কোনোটি প্রমাণ করতে পারেনি। জায়গাটা দুই ভাইয়ের। সে রাস্তার অংশ কাউকে কিছু না বলে মেয়েদের নামে লিখে দিয়েছে। সে যে বাড়ি বানিয়েছে, সেখানে থাকার পরিবেশও নেই। চাঁদা দাবির অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, দুই ভাইয়ের জায়গা–সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আছে। একই জায়গা দুজনেই দাবি করছেন। বিষয়টি আদালতের। আদালত যে রায় দেবেন, সেই অনুযায়ী মালিকানা নির্ধারিত হবে।

জানা গেছে, নির্মাণকাজে বাধা ও চাঁদা দাবির অভিযোগে গিয়াস উদ্দীন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (নং ২০১৯, ধারা ৪৪৭, ৪৪৮, ৩৮০, ৩৮৫, ৫০৬(২)/৩৪) দায়ের করেছেন। মামলাটি বিচারাধীন। তিনি দ্রুত প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X