

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সিলেট অঞ্চল সরাসরি ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ডাউকি ফল্টের ওপর অবস্থান করছে। নগর কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দূরেই এই ভূগর্ভস্থ চ্যুতি রেখা।
এর দক্ষিণে ডাউকি ফল্ট এবং উত্তর–পূর্ব দিক ধরে ভুটান পর্যন্ত বিস্তৃত কপিলি ফল্ট- দুটি সক্রিয় ফল্টই সিলেটের নিকটবর্তী হওয়ায় অঞ্চলটিকে ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকির এলাকায় হিসেবে বহুদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন ভূতাত্ত্বিকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় ধরনের ভূমিকম্পের আগে বা পরে ছোট ছোট কম্পন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এর উদাহরণ হিসেবে ২০২১ সালের ২৯ মে সিলেটে একদিনে ৪ বার এবং ২৪ ঘণ্টায় মোট ৭ বার ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
সিলেট থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্বও খুব বেশি নয়; ফলে ৬ মাত্রার ওপরে কোনো ভূমিকম্প হলে এর প্রভাব ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সম্প্রতি নরসিংদীর মাধবদীতে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকায় বড় ধরনের ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হওয়ায় আবারও বিশেষ নজরে এসেছে ডাউকি ফল্ট।
বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরে দুর্যোগ প্রস্তুতির অভাব নিয়ে সতর্ক করে এলেও বাস্তবে সিলেট অঞ্চল এখনো সেই প্রস্তুতিকে দৃশ্যমান করতে পারেনি। ফলে শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
ভূতাত্ত্বিক নথিপত্র বলছে, এ অঞ্চলে ১৮৯৭ এবং ১৯৮০ সালে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল।
মাঝে মাঝেই সেখানে স্বল্পমাত্রার কম্পন অনুভূত হয়, বিশেষ করে ২০২১ সালের ধারাবাহিক ভূমিকম্প সিলেটের বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলো সতর্ক সংকেত হলেও আসল ঝুঁকি লুকিয়ে আছে কপিলি ফল্টে জমে থাকা বিপুল শক্তিতে। যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূকম্পন সেখানে শুরু হতে পারে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ও এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জহির বিন আলম বলেন, “উত্তর ও উত্তর–পূর্বাঞ্চল ভৌগোলিক কারণে ভূমিকম্প–সংবেদনশীল।
বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ইউরেশিয়ান—এই তিন টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থলের কাছেই এ অঞ্চল অবস্থিত। ফলে বড় মাত্রার একটি ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলী আকবর জানান, “আমরা ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্তের কাজ শুরু করেছি।”
মন্তব্য করুন
