

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার কাচারির পাশে অবস্থিত প্রায় ৬ দশমিক ৬৬ একর আয়তনের একটি সরকারি জলমহাল মৎস্য আইন ও জলমহাল ব্যবস্থাপনা বিধিমালা লঙ্ঘন করে ব্যক্তি নামে লিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনকে প্রভাবিত করে কাজী আক্তার নামের এক ব্যক্তি জলমহালটি পাঁচ বছরের জন্য (২০২৮ সাল পর্যন্ত) লিজ গ্রহণ করেন। অথচ মৎস্য আইন–২০০৯ অনুযায়ী সরকারি জলমহাল ব্যক্তি নয়, বরং নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির মাধ্যমে ইজারা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
রিট বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও লিজ প্রদানের অভিযোগ জানা যায়, আলোচিত জলমহালটি নিয়ে স্থানীয় গোয়ালনগর সাহারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেছে (রিট নং–১৪১৮৫/২৪), যা বর্তমানে বিচারাধীন। অভিযোগ রয়েছে, রিট বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় ভূমি অফিসের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আক্তারকে জলমহালটির লিজ প্রদান করেন।
গোয়ালনগর সাহারা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিমল চন্দ্র দাস বলেন, “ব্যক্তি নামে জলমহাল লিজ দেওয়ার মাধ্যমে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে অবিলম্বে লিজ বাতিল করা উচিত।”
এ বিষয়ে লিজগ্রহীতা কাজী আক্তার বলেন, “আমার বিপক্ষ লোক হাইকোর্টে আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। আমাকে লিজ দিয়েছে ডিসি স্যার, ইউএনও স্যারের মাধ্যমে। হাইকোর্ট থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাকে এটি দেওয়ার জন্য। ডিসি স্যারের নির্দেশে দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। আমি নিয়মিত খাজনা দিচ্ছি এবং মাছ চাষ করছি।”
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাশেম বলেন,জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী লিজ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে হাইকোর্টের রিট প্রযোজ্য নয়। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফরিদুল হক বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, বিধিমালা উপেক্ষা করে ব্যক্তি নামে জলমহাল লিজ দেওয়ায় সরকার কয়েক লাখ টাকা রাজস্ব হারাতে পারে। পাশাপাশি লিজগ্রহীতা চুক্তিনামা লঙ্ঘন করে জলমহালের পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প বসিয়েছেন, যা পরিবেশ ও জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
হবিগঞ্জ জেলা দুদকের উপপরিচালক এরশাদ আলী বলেন, সরকারি রাজস্ব ক্ষতির প্রমাণ পাওয়া গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
