শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে যে কারণে এগিয়ে মামদানি

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
expand
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে যে কারণে এগিয়ে মামদানি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থী জোহরান মামদানি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছেন, যা শহরের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গত জুনে দলীয় প্রাইমারিতে তার অভূতপূর্ব জয় এবং নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগে দৃঢ় অবস্থান বিশ্লেষকদের দৃষ্টি কেড়েছে। তারা বলছেন—প্রথাগত রাজনীতির ব্যর্থতা, প্রগতিশীল বার্তা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগই মামদানির জনপ্রিয়তার মূল কারণ।

মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তনের এই ঢেউ দেখা যাচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ফলাফল প্রমাণ করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পুরনো ধাঁচের নীতি ও বার্তা এখন ভোটারদের কাছে আকর্ষণ হারাচ্ছে—বিশেষ করে জীবনযাত্রার ব্যয়, আয় বৈষম্য ও আবাসন সংকটের মতো বিষয়গুলোতে।

ম্যানহাটনের জন জে কলেজ অফ ক্রিমিনাল জাস্টিসের অধ্যাপক সুসান ক্যাং বলেন, মামদানির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুওমো তরুণদের চোখে পুরনো রাজনীতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাই নতুন প্রজন্ম ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিকল্প হিসেবে মামদানিকে দেখছে।

রাজনীতিতে ‘বার্নি স্যান্ডার্স প্রভাব’ এখনো সক্রিয়, আর মামদানিই তার বর্তমান ধারক-বাহক হিসেবে দেখা দিচ্ছেন। একসময় ‘সোশ্যালিজম’ শব্দটি মার্কিন রাজনীতিতে বিতর্কিত হলেও এখন ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাপ তরুণ ও শ্রমজীবী ভোটারদের এই ধারায় টেনে আনছে।

মামদানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন— ভাড়া স্থগিতাদেশের নীতি পুনর্বহাল, নগর পরিবহন বিনামূল্যে করা, সর্বজনীন শিশুযত্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও উচ্চ আয়ের নাগরিকদের ওপর বাড়তি কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন।

নিউইয়র্কের সাধারণ জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কই মামদানির সবচেয়ে বড় শক্তি। রাজনৈতিক ভাষণের বদলে তিনি মাঠে কাজ করেছেন—সাবওয়ে যাত্রী, ডেলিভারি কর্মী, ট্যাক্সিচালক ও হালাল কর্মীদের দৈনন্দিন সংগ্রাম নিয়ে নিয়মিত কথা বলেছেন।

অধ্যাপক সুসান ক্যাংরে ভাষায়, মামদানির মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্তরিকতা তাকে অন্য প্রার্থীদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি রাজনীতিতে ব্যক্তিত্ব ও সহানুভূতির ভারসাম্য আনতে পেরেছেন।”

ফিলিস্তিন ইস্যুতেও মামদানি স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন। গাজার পরিস্থিতিকে তিনি প্রকাশ্যে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে বিরল সাহসিকতা। এ কারণেই তিনি শুধু নিউইয়র্ক নয়, সারা দেশের প্রগতিশীল ভোটারদের কাছেও এক প্রতীকী ব্যক্তিত্বে পরিণত হচ্ছেন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন