

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিজেপির রানাঘাটের সংসদ সদস্য জগন্নাথ সরকার। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নদীয়ার মাটিয়ারি বানপুর এলাকায় এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই রাজনৈতিক অঙ্গনকে নাড়িয়ে দেয়।
জগন্নাথ সরকারের বক্তব্যে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে আমরা জিতলে বাংলাদেশ সীমান্তে আর কাঁটাতার থাকবে না। দুই বাংলাই আবার এক হয়ে যাবে।” এরপর আরও যোগ করেন, “তৃণমূল জিতলেও কাঁটাতার থাকবে না, তবে তখন সেটি বাংলাদেশই থাকবে।
তার এই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই সীমান্ত থেকে কলকাতা পর্যন্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে এমন সংবেদনশীল মন্তব্যে বিজেপির মধ্যেই তৈরি হয়েছে অস্বস্তির পরিবেশ।
এতদিন অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত নিরাপত্তাকে কেন্দ্র করেই বিজেপি তাদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে আসছিল। দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা বারবার অভিযোগ করেছেন, সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের তৃণমূল কংগ্রেস নানাভাবে সহযোগিতা দিচ্ছে, যার ফলে রাজ্যের জনসংখ্যাগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সেই দলেরই এক সাংসদের মুখে কাঁটাতার তুলে দেওয়ার আশ্বাস—এটি নিঃসন্দেহে বিজেপির অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেস এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে পাল্টা আক্রমণে নেমেছে। দলটির নেতারা বলছেন, বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে খেলছে। তাদের দাবি, “একজন সংসদ সদস্যের মুখে দুই বাংলার এক হওয়ার মতো মন্তব্য শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীন নয়, বরং এটি সীমান্ত নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্যও বিপজ্জনক।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, একজন জনপ্রতিনিধির মুখে এমন মন্তব্য করা অতি হঠকারী পদক্ষেপ। তাদের মতে, এটি শুধু রাজ্য রাজনীতিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে না, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শালীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।
এদিকে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে চলছে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া। বিজেপির দাবি, এর মাধ্যমে অবৈধ ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, বৈধ নাগরিকদের ভোটাধিকার খর্ব করার চেষ্টা চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিজেপি সাংসদের “কাঁটাতার তুলে দেওয়া” মন্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে আত্মঘাতী বলছেন পর্যবেক্ষকরা।
মন্তব্য করুন
