

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পুনর্গঠনের উদ্যোগ প্রায় থমকে গেছে। ধ্বংসস্তূপে এখনো চাপা পড়ে আছেন হাজারো বাসিন্দা, আর চারদিকে ছড়িয়ে আছে বিপুল পরিমাণ অবিস্ফোরিত বোমা-যা গাজার মানুষের জীবনে নতুন বিপদের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল নির্মাণসামগ্রী ও ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় গাজা সিটির অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের মেয়র ইয়াহিয়া আল-সররাজ জানিয়েছেন, পানি সরবরাহ ও নতুন কূপ খননের জন্য অন্তত ২৫০টি ভারী যন্ত্র ও এক হাজার টন সিমেন্ট জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন-কিন্তু কোনোটি এখনো পৌঁছায়নি।
স্থানীয় সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না পাওয়ায় পুনর্গঠনের অগ্রগতি শূন্যের কোঠায়” রয়েছে।
তার ভাষায়, প্রায় ৯ হাজার ফিলিস্তিনি এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, অথচ নতুন যন্ত্রপাতিগুলো ব্যবহার হচ্ছে কেবল ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারে।
সম্প্রতি রাফাহ শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, রেড ক্রসের গাড়ি হামাসের কাসাম ব্রিগেডকে ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, গাজায় কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বাহিনী কাজ করবে, তা নির্ধারণ করবে একমাত্র ইসরায়েল নিজেই। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রও এই অবস্থানের সঙ্গে একমত।
পুনর্গঠনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অবিস্ফোরিত বোমাগুলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা হালো ট্রাস্টের মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক নিকোলাস টরবেট বলেন, গাজার প্রায় প্রতিটি এলাকায় বোমা পড়েছে, এবং অনেকগুলো এখনো নিষ্ক্রিয় হয়নি। সেগুলো অপসারণে দীর্ঘ সময় লাগবে, ফলে পুনর্গঠনের গতি আরও কমে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসালের হিসাবে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় প্রায় দুই লাখ টন বোমা নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার টন এখনো বিস্ফোরিত হয়নি।
এ অবস্থায় মানবিক সহায়তা, চিকিৎসা এবং অবকাঠামো পুনর্গঠনের সব ক্ষেত্রেই গাজার জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, অবরোধ না উঠলে এই মানবিক সংকট আরও গভীর হতে পারে।
মন্তব্য করুন

