

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সিঙ্গাপুরে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তরের দিকে পদযাত্রা আয়োজনের অভিযোগে অভিযুক্ত তিন নারীকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তাদের কর্মকাণ্ড আইন ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে না এবং তারা পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাসম্ভব সতর্ক ছিলেন।
রায় ঘোষণার পর এক অভিযুক্ত নারী বলেন, এই অপ্রত্যাশিত রায় সিঙ্গাপুরের মানবাধিকারকর্মীদের জন্য নতুন আশা ও সাহসের বার্তা।
সিঙ্গাপুরে জনসমাবেশ বা প্রতিবাদ আয়োজন অত্যন্ত কঠিন। আইন অনুযায়ী যেকোনো ধরনের সমাবেশের জন্য পুলিশের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক, বিশেষ করে ইসরায়েল–গাজা যুদ্ধসংক্রান্ত কর্মসূচি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সরকারের দাবি, এমন আয়োজন জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে। তবে সমালোচকদের মতে, এই কঠোর নিয়ম মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করে।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন তিন নারী-মোসাম্মদ সোবিকুন নাহার, সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি ও কোকিলা আন্নামালাই-একটি সংহতি ইভেন্টে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করেন। প্রায় ৭০ জন অংশগ্রহণকারী ওই কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীরা তরমুজের নকশা আঁকা ছাতা বহন করছিলেন-যা ফিলিস্তিনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সরকারি পক্ষের অভিযোগ ছিল, তারা অনুমতি ছাড়া একটি নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেন। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, স্থানটি নিষিদ্ধ এলাকা বলে কোনো স্পষ্ট সাইনবোর্ড ছিল না, এবং অভিযুক্তরা আইন মেনে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।
দোষী প্রমাণিত হলে প্রত্যেকের ১০ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারত।
রায় ঘোষণার পর কোকিলা আন্নামালাই বলেন, আমরা ভেবেছিলাম দোষী সাব্যস্ত হবো। কিন্তু এই রায় আমাদের অবাক করেছে এবং একই সঙ্গে আশা জাগিয়েছে। তবুও দুঃখজনক যে, এমন শান্তিপূর্ণ উদ্যোগের জন্য আমাদের আদালতে দাঁড়াতে হলো।
তিনি আরও যোগ করেন, এই রায় হয়তো সিঙ্গাপুরে সামাজিক আন্দোলন ও নাগরিক উদ্যোগকে নতুন সাহস দেবে।
এদিকে, সিঙ্গাপুরের প্রসিকিউশন বিভাগ জানিয়েছে, তারা আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বিবেচনা করছে। পাশাপাশি ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে আয়োজিত অন্যান্য অনলাইন ও সরাসরি ইভেন্ট সম্পর্কেও তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন
