

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রভাবশালী দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার দক্ষিণ গাজা নগরীর জর্ডানিয়ান হাসপাতালের নিকটে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গোলাগুলি চলে।
গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট মিলে শহরের একটি এলাকায় অবস্থানরত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের ঘিরে ফেললে গুলিবিনিময় শুরু হয়।
তাদের গ্রেফতারের চেষ্টাকালে তীব্র লড়াই ছড়িয়ে পড়ে। এতে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত আট সদস্য নিহত হন।
স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, দুগমুশ গোত্রের ১৯ জন সদস্য ও হামাসের আট যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, তেল আল-হাওয়া এলাকার একটি বহুতল ভবনে দুগমুশ গোষ্ঠীর সদস্যরা অবস্থান নিলে, হামাসের প্রায় তিন শতাধিক যোদ্ধা সেখানে অভিযান চালাতে যায়। অভিযানের শুরুতেই দুই পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়, যা দ্রুত আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষে আতঙ্কে অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের একজন বলেন, “মানুষ এবার ইসরায়েলি হামলা থেকে নয়, নিজেদেরই লোকজনের কাছ থেকে পালাচ্ছে।”
গাজা উপত্যকায় দুগমুশ গোত্র অন্যতম শক্তিশালী পরিবার, যাদের সঙ্গে হামাসের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। অতীতেও তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
হামাসের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বাহিনী মাঠে কাজ করছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, “প্রতিরোধ আন্দোলনের কাঠামোর বাইরে কেউ সশস্ত্র কর্মকাণ্ড চালালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে। হামাসের দাবি, দুগমুশ গোত্রের যোদ্ধারা তাদের দুই সদস্যকে হত্যা ও পাঁচজনকে আহত করেছে, যা প্রতিশোধমূলক অভিযানকে প্ররোচিত করেছে।
অন্যদিকে দুগমুশ গোত্রের এক সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, হামাসের যোদ্ধারা একসময় জর্ডানিয়ান হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে।
সেই ভবনে সম্প্রতি আল-সাবরা এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল, যাদের অধিকাংশই দুগমুশ গোত্রের সদস্য।
তাদের অভিযোগ, হামাস আশ্রিত পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করে ভবনটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এই ঘটনাই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়।
গাজার এই অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মন্তব্য করুন
