

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেন, আল-আকসা এখন ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে।
এই ঘটনাকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ নতুন করে উসকানি ও দখলচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখছে। মুসলিম বিশ্ব বারবার আল-আকসার পবিত্রতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানালেও, বেন-গভিরের এই সফরকে সেই আহ্বানের প্রকাশ্য অবমাননা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বেষ্টিত প্রবেশ এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের কার্যকলাপের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে সৌদি আরব। এই ধরনের পদক্ষেপ পবিত্র স্থানের ঐতিহাসিক ও আইনি অবস্থান পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রচেষ্টা।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়,
জেরুজালেমের স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের যেকোনো উদ্যোগ সৌদি আরব প্রত্যাখ্যান করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছে, যেন পবিত্র স্থানের লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়।
সাক্ষীদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে,
নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বেন-গভির আল-আকসা প্রাঙ্গণে গিয়ে ইহুদি ধর্মীয় আচার সম্পাদন করেন। পরে তিনি ঘোষণা দেন, “এখন আল-আকসার মালিক ইসরাইল।
আল-আকসা মসজিদে অমুসলিমদের প্রার্থনার ওপর আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ১৭৫৭ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ফরমানের মাধ্যমে। সেই ফরমান অনুযায়ী, মুসলমানরা আল-আকসায় নামাজ আদায় করবেন, আর ইহুদিরা পাশের ওয়েস্টার্ন ওয়ালে প্রার্থনা করবেন-যা আজও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘স্থিতাবস্থা’ হিসেবে গণ্য হয়।
কিন্তু ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর ইসরাইলি প্রশাসন বারবার সেই সমঝোতা ভঙ্গ করছে বলে অভিযোগ ওঠে। ফিলিস্তিনপন্থী নেতারা বলছেন, বেন-গভিরের মতো উগ্র রাজনীতিকদের এসব পদক্ষেপ আসলে আল-আকসাকে ধীরে ধীরে ইহুদি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনারই অংশ।
মুসলমানদের কাছে আল-আকসা মসজিদ মক্কা ও মদিনার পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। অপরদিকে, ইহুদিরা দাবি করে এখানেই তাদের প্রাচীন মন্দির বা প্রার্থনাগৃহ ছিল, যা পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা বহু বছর ধরে আলোচনায় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, বেন-গভিরের সাম্প্রতিক এই সফর আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে এবং এটি শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য একটি গুরুতর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
মন্তব্য করুন
