

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দীর্ঘদিন ধরে চলমান উত্তেজনার অবসান ঘটাতে অবশেষে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার (১০ অক্টোবর) ভোরে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে। কাতারের রাজধানী দোহায় আয়োজিত বৈঠকে তুরস্কও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখে।
শনিবার কাতারে পৌঁছায় দুই দেশের প্রতিনিধি দল। সেদিনই তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষ থামানোর বিষয়ে একমত হয় তারা।
এই যুদ্ধবিরতি যেন টেকসই হয়, সেজন্য ভবিষ্যতে দু’দেশের মধ্যে আরও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো এমন বড় ধরনের সরাসরি সংঘর্ষে জড়ায় দুই প্রতিবেশী দেশ।
গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই সহিংসতায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি এবং কয়েক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আলোচনায় আফগানিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। অপরদিকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।
দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে দীর্ঘ ২,৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, আফগানিস্তান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় ও সহযোগিতা দিচ্ছে, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো সংগঠনগুলোকে।
এই অভিযোগের জের ধরে দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আফগান সেনারা সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা করে। সংঘর্ষ দ্রুত ভয়াবহ রূপ নেয় এবং এতে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে।
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় দুই দেশ সম্প্রতি ৪৮ ঘণ্টার একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। কিন্তু সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তান ফের বিমান হামলা চালায় আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায়।
যদিও তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সে সময়েই পাকিস্তান হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তারা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করে না। অন্যদিকে পাকিস্তান বারবার সীমান্তপারের হামলার জন্য আফগান মাটি ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ করে আসছে।
এই প্রেক্ষাপটে, গত শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়ার এক এলাকায় টিটিপির আত্মঘাতী বোমা হামলায় সাত পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। এই ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা বাড়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও সংঘর্ষ পুরোপুরি থেমে গেছে বলা যাচ্ছে না, তবে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনা নতুন করে উজ্জ্বল হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
মন্তব্য করুন
