মরক্কোয় ‘জেন জি’ আন্দোলনে দুই হাজারের বেশি অভিযুক্ত

মরক্কোতে সাম্প্রতিক তরুণ প্রজন্মের ‘জেন জি’ আন্দোলনের ঘটনায় মোট ২,৪৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির সরকার। এটি দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক অস্থিরতার ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে ১,৪৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এবং বিচার প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেওয়া, সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলা, প্রশাসনিক কাজে বাধা সৃষ্টি ও অপরাধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই আন্দোলনের সূচনা হয় ‘জেনজি ২১২’ নামের এক তরুণ সংগঠনের মাধ্যমে, যারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান খাতে সরকারের অবহেলা এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সংগঠনটির দাবি, সরকার বিপুল অর্থ ব্যয় করছে খেলাধুলা ও অবকাঠামো প্রকল্পে, অথচ সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে।

যদিও সংগঠনটির পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিছু এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়, বহু মানুষ আহত হন এবং দোকানপাট ও যানবাহনে ক্ষয়ক্ষতি হয়।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের কঠোর অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছে। মরক্কান অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, এসব গ্রেফতার এলোমেলো ও অযৌক্তিকভাবে করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী পরিচালক হানান সালাহ বলেন, তরুণদের ন্যায্য ভবিষ্যতের দাবির জবাব গুলি বা দমননীতির মাধ্যমে দেওয়া যায় না।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় র‍্যাপার হামজা রায়েদ, যিনি গত মাসে কাসাব্লাঙ্কা শহর থেকে গ্রেপ্তার হন। তার গানগুলোতে প্রায়ই রাজনীতি ও তরুণদের ক্ষোভের প্রতিফলন দেখা যায়।

অন্যদিকে সোমবার রাজধানীর আদালতে তিনজন অভিযুক্তকে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারি সংস্থাকে অপমান এবং অপরাধে প্ররোচনা দিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, তারা জাতীয় ফুটবল দলের জার্সিতে প্রতিবাদী স্লোগান মুদ্রণ করেছিলেন। আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।