বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রয়টার্স জরিপ

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতিতে অধিকাংশ মার্কিনির সমর্থন

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০২ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা
expand
যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

যুক্তরাষ্ট্রে জনগণের একটি বড় অংশ মনে করেন, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইপসোস পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ডেমোক্র্যাট দলের প্রায় ৮০ শতাংশ এবং রিপাবলিকানদের ৪১ শতাংশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে মত দিয়েছেন।

জরিপটি টানা ছয় দিন ধরে পরিচালিত হয় এবং শেষ হয় সোমবার। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দেন, ৩৩ শতাংশ বিরোধিতা করেন এবং বাকিরা নিরপেক্ষ থাকেন বা কোনো মত দেননি।

রিপাবলিকান দলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ভিন্নমত স্পষ্ট—দলের ৫৩ শতাংশ সদস্য ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিরোধিতা করেছেন, যেখানে ৪১ শতাংশ সমর্থন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, গাজায় বর্তমানে যে স্বাস্থ্য সংকট চলছে, তার প্রভাব “আগামী কয়েক প্রজন্ম ধরে” অনুভূত হতে পারে।

বিবিসি রেডিও ৪-এর টুডে অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তেদরোস জানান, গাজার মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে এখনই বিপুল পরিমাণ সহায়তা পৌঁছানো জরুরি। তিনি বলেন, হামাসের সঙ্গে ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েল কিছুটা শিথিলতা এনে গাজায় চিকিৎসাসামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। তবে তার ভাষায়, “এই সহায়তা পরিমাণ এখনো অত্যন্ত সীমিত, যা গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধারে যথেষ্ট নয়।”

ডব্লিউএইচও প্রধানের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন গত সপ্তাহান্তে গাজায় ফের সহিংসতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছে। হোয়াইট হাউস জানায়, এই যুদ্ধবিরতি তাদের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ, যার অন্যতম লক্ষ্য—গাজায় সহায়তা বাড়ানো এবং উভয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই তা জনগণের কাছে পৌঁছানো।

তেদরোস এই যুদ্ধবিরতিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানালেও বলেন, “গাজায় সহায়তার প্রবাহ এখনো প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছেনি।”

মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তেদরোস আধানম বলেন, গাজার মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষ, শারীরিক আঘাত, স্বাস্থ্য অবকাঠামোর ধ্বংস, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের অভাব—সবকিছুর সম্মিলিত চাপে ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তার ভাষায়, “এই উপাদানগুলো একসঙ্গে মিলে এমন এক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, যা প্রায় বর্ণনাতীত।”

গাজার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “দুর্ভিক্ষ ও মানসিক স্বাস্থ্য সংকট একত্রে এমন ক্ষত তৈরি করছে, যার প্রভাব ভবিষ্যৎ প্রজন্মও বহন করবে।”

এদিকে, জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ–এর প্রধান টম ফ্লেচার জানিয়েছেন, সহায়তা সংস্থাগুলো গাজায় “অনাহার সংকট” মোকাবিলায় কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে, তবে এখনও পর্যাপ্ত সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা দ্রুত ও ব্যাপকভাবে না পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন