

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় পদ ‘গ্র্যান্ড মুফতি’ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত শায়খ সালেহ আল-ফাওযান। পবিত্র দুই মসজিদের খাদেম ও সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ তার নিয়োগ অনুমোদন করেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের সুপারিশে এই রাজকীয় নির্দেশ জারি করা হয়। নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে শায়খ ফাওযান দায়িত্ব নেন প্রয়াত শায়খ আবদুলআজিজ আল-শেখের স্থলাভিষিক্ত হয়ে, যিনি গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন।
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োগ
রাজকীয় ফরমান অনুযায়ী, শায়খ সালেহ আল-ফাওযান এখন থেকে সিনিয়র আলেম পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইফতা ও গবেষণাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।
সৌদি আরবে ইসলামি শিক্ষার অঙ্গনে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অন্যতম প্রভাবশালী আলেম হিসেবে পরিচিত। এর আগে তিনি সিনিয়র আলেম পরিষদ ও ইফতা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি মুসলিম বিশ্ব লীগের আওতাধীন ইসলামিক ফিকহ কাউন্সিল এবং হজ মৌসুমের দাঈ তত্ত্বাবধান কমিটিরও সদস্য ছিলেন।
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
১৯৩৫ সালে সৌদি আরবের আশ-শিমাসিয়াহ, কাসিম অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন শায়খ আল-ফাওযান। শৈশবেই পিতৃহীন হয়ে পড়লেও তিনি স্থানীয় মসজিদের ইমাম শায়খ হাম্মুদ বিন সুলায়মান আত-তিলাল-এর তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠেন। তার কাছেই কুরআন তিলাওয়াত ও প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন।
১৯৫০ সালে তিনি আশ-শিমাসিয়াহর একটি সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৫২ সালে বুরাইদার আল-ফয়সালিয়া স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর অল্প সময়ের জন্য শিক্ষকতা করেন।
১৯৫৪ সালে ভর্তি হন সদ্য প্রতিষ্ঠিত বুরাইদা ইসলামী ইনস্টিটিউট-এ। সেখান থেকে চার বছরের পাঠশেষে তিনি রিয়াদের শরিয়াহ কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে একই প্রতিষ্ঠানে ফিকহ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
তার গবেষণার বিষয় ছিল—স্নাতকোত্তরে: ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে অনুমানভিত্তিক অনুসন্ধানের প্রয়োগ।
পিএইচডিতে: শরিয়াহর দৃষ্টিকোণ থেকে খাদ্য সংক্রান্ত বিধান
শায়খ ফাওযান কর্মজীবনের শুরু করেন হায়ার ইনস্টিটিউট অব জুডিশিয়ারির পরিচালক হিসেবে। ১৯৯২ সালে তিনি স্থায়ী ইফতা কমিটির সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন।
বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক হিসেবে তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইসলামী ফিকহ ও শরিয়াহ বিষয়ে তার লেখা বইগুলো বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এছাড়া তিনি সৌদির জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠান ‘নূর আলা আল-দার্ব’-এর নিয়মিত বক্তা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
নতুন অধ্যায়ের সূচনা শায়খ সালেহ আল-ফাওযানের নিয়োগের মধ্য দিয়ে সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতৃত্বে শুরু হলো নতুন অধ্যায়। তার নেতৃত্ব একাধারে ঐতিহ্য, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটাবে বলে মনে করছেন দেশটির ধর্মীয় মহল।
মন্তব্য করুন
