

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বয়স শুধু সংখ্যামাত্র এ কথার বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছেন ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদের মন্দাকিনী শাহ। বয়স ৮৭ ছুঁলেও এখনো স্কুটি নিয়ে নির্বিঘ্নে শহরের রাস্তায় চলাফেরা করেন তিনি। ছোট বোন উষাকে নিয়ে নিয়মিত স্কুটি চালিয়ে বের হওয়াটা তাঁর কাছে এক ধরনের আনন্দভ্রমণ।
সম্প্রতি দুই বোনের স্কুটি যাত্রার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুত ভাইরাল হয়। বয়সের সীমাকে অতিক্রম করে চলার এই দৃশ্য বহু মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
হিউম্যানস অব বোম্বেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্দাকিনী জানান, বোন উষার প্রতি তার ভালোবাসা প্রবল। একসঙ্গে স্কুটি চালিয়ে শহর ঘোরার মজা তাদের আলাদা এক সম্পর্ক তৈরি করেছে। কেউ যখন তাকে জিজ্ঞেস করেন এ বয়সেও কেন স্কুটি চালান? তিনি নির্ভীকভাবে বলেন, “চালাব না কেন?”
মন্দাকিনী জানান, তিনি ৬২ বছর বয়সে স্কুটি চালানো শিখেছেন। তাঁর মতে, নিজের স্বাধীনতা ধরে রাখা সবচেয়ে বড় শক্তি।
ছয় ভাইবোনের বড় হওয়ায় খুব অল্প বয়স থেকেই পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়েছে তাকে। মন্দাকিনীর বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ব্যবসা করার চেষ্টা করলেও পুঁজি না থাকায় সফল হতে পারেননি। ফলে পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন ছিল নিয়মিত।
মন্দাকিনী তার মাকে প্রতিনিয়ত কঠোর পরিশ্রম করতে দেখেছেন। সেই অভিজ্ঞতাই তাকে শেখায় আত্মনির্ভরতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি বাল মন্দিরে শিক্ষকতা শুরু করেন, যদিও তখন তার ইংরেজি খুব ভালো ছিল না। পরবর্তী সময়ে সমাজসেবা, উন্নয়ন প্রকল্প ও নানা কল্যাণমূলক কাজে যুক্ত হন।
এসব কাজের সুবাদে তিনি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশেছেন, দেশের নানা অঞ্চলে ঘুরেছেন এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন যানবাহন চালানো শিখেছেন মোপেড, জিপ, আর পরে একটি সেকেন্ড-হ্যান্ড স্কুটি।
মন্দাকিনীর জীবনের মূল দর্শন নিজস্ব পথে এগিয়ে চলা। তিনি বিয়ে করেননি। সমাজের প্রশ্নোত্তর, ধ্যান-ধারণা কিংবা সমালোচনা কোনো কিছুই তাকে নিজের মতো করে জীবনযাপন থেকে দূরে সরাতে পারেনি। কখনো বিয়ে করার ইচ্ছা থাকলেও জীবন তাকে ভিন্ন দিশায় নিয়ে গেছে, আর তিনি সেখানেই নিজের সুখ খুঁজে পেয়েছেন।
মন্তব্য করুন
