

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দিল্লির লাল কেল্লা বিস্ফোরণ তদন্তে উঠে এসেছে রোমহর্ষক তথ্য। শুধু একটি নয়-বিস্ফোরক বোঝাই ৩২টি গাড়ি ব্যবহার করে ভারতের ৩২টি স্থানে একযোগে হামলার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। লক্ষ্য ছিল ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকী। ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার এই ভয়ংকর পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস করেছে তদন্তে জড়িত এক নির্ভরযোগ্য সূত্র, যা প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সোমবারের বিস্ফোরণে নিহত উমরের সহযোগী আদিল আহমেদ রাথার, মুজাম্মিল শাকিল ও শাহিনা সাঈদ গ্রেফতারের পরই গোটা মডিউলের ছক উদঘাটিত হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৮ জনকে, যাদের দুজন করে দলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি দল নিজ নিজ এলাকায় আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ব্যবহার করে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তদন্ত সূত্রের দাবি, চিকিৎসক মুজাম্মিল, উমর, আদিল ও শাহিনা মিলে প্রায় ২০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন হামলার প্রস্তুতির জন্য। সেই অর্থ উমরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গুরুগ্রাম, নুহ এবং আশপাশের এলাকা থেকে ‘এনপিকে’ নামে বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ কেনা হয়। উমর আরও একটি সিগন্যাল অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন, যেখানে দুই থেকে চারজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, পুরো পরিকল্পনার নেপথ্যে ছিল পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে চারটি গাড়ি-হুন্ডাই আই২০, মারুতি ব্রেজা, মারুতি ডিজায়ার এবং ফোর্ড ইকোস্পোর্ট। এর মধ্যে আই২০ গাড়িটিই সোমবার বিকেলে লাল কেল্লার সামনে বিস্ফোরিত হয়, যাতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
তদন্তে আরও জানা যায়, ব্যবহৃত গাড়িগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে পুরোনো ও একাধিকবার বিক্রি হওয়া গাড়ির তালিকা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছিল, যাতে মালিকানার হদিস পাওয়া কঠিন হয়। বিস্ফোরণের প্রস্তুতি চলছিল হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফলাহ মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে, যা এখন চক্রের ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত।
ফরিদাবাদেই বুধবার গভীর রাতে উদ্ধার করা হয় একটি ফোর্ড ইকোস্পোর্ট। গাড়ির ভেতর থেকে এক যুবককে আটক করে এনআইএ। এ ছাড়া বাজেয়াপ্ত ডিজায়ার গাড়ি থেকে পাওয়া গেছে একে-৪৭ রাইফেল এবং বিপুল পরিমাণ গুলি।
প্রাথমিক তদন্তে ধারণা মিলেছে, বিস্ফোরণের সময় উমর মোহাম্মদের ভুলের কারণেই আগেভাগে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে তার মৃত্যু হয়। ডিএনএ পরীক্ষায়ও বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
উমর ও তার দল প্রথমে লাল কেল্লার পার্কিং লটে গাড়ি রেখে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেদিন পর্যটকদের জন্য লাল কেল্লা বন্ধ থাকায় পরিকল্পনা বদলে তারা বেছে নেয় লাল কেল্লার মূল ফটকের সামনের ব্যস্ত ট্রাফিক সিগন্যাল এবং মেট্রো স্টেশন এলাকা-যা পরিণত হয় ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী ঘটনায়।
মন্তব্য করুন
