বুধবার
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরআনে যে কারণে সরাসরি ‘তুষারঝড় বা বরফের’ কথা উল্লেখ নেই

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম
মরুভুমির ছবি
expand
মরুভুমির ছবি

পবিত্র কোরআনে সরাসরি ‘তুষারঝড়’ বা ‘বরফ’ শব্দটি উল্লেখ নেই। তবে, কোরআনে এমন কিছু আয়াত আছে, যেখানে এমন প্রাকৃতিক ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যা তুষারপাত বা শিলাবৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত।

পণ্ডিত এবং ব্যাখ্যাকারীরা সাধারণত সূরা আন-নূর-এর ৪৩ নম্বর আয়াতটির ব্যাখ্যায় বরফ বা শিলাবৃষ্টির বিষয়টিকে সংযুক্ত করেন।

সূরা আন-নূর (২৪): ৪৩ এই আয়াতটির একটি অংশের অনুবাদ হলো:

"তুমি কি দেখ না আল্লাহ মেঘমালাকে চালিত করেন, অতঃপর সেগুলোকে একত্রে জুড়ে দেন, অতঃপর সেগুলোকে স্তূপীকৃত করেন, অতঃপর তুমি তার মধ্য থেকে পানির ধারা বের হতে দেখতে পাও, আর তিনি আকাশস্থিত মেঘমালার পাহাড় থেকে শিলা (আরবিতে: বারাদ) বর্ষণ করেন, অতঃপর তিনি যাকে ইচ্ছে তা দিয়ে আঘাত করেন আর যার কাছ থেকে ইচ্ছে তা সরিয়ে দেন? এর বিদ্যুতের ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।"

এখানে যে শব্দটির অনুবাদ সাধারণত 'শিলা' বা 'বরফের মতো কিছু' করা হয়, তা হলো আরবি শব্দ 'বারাদ' (بَرَد)। 'বারাদ' শব্দটি মূলত বরফের টুকরা বা শিলাবৃষ্টিকে বোঝায়। এই আয়াতে আকাশস্থিত মেঘমালাকে "পাহাড়ের মতো" স্তূপীকৃত করার উপমা দেওয়া হয়েছে, যা থেকে এই শিলা/বরফ বর্ষিত হয়।

সরাসরি 'তুষার' বা 'বরফ' শব্দটি নেই: কোরআন যখন মক্কা ও মদিনার মতো উষ্ণ মরুভূমি অঞ্চলে অবতীর্ণ হয়েছিল, তখন সেখানকার মানুষের কাছে তুষার একটি অপরিচিত বিষয় ছিল। তাই সরাসরি 'তুষার' শব্দটি ব্যবহার না করে, এর নিকটতম একটি প্রাকৃতিক ঘটনা-শিলাবৃষ্টি বা বরফের টুকরা-'বারাদ' শব্দটির মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে।

হাদিসে উল্লেখ: যদিও কোরআনে সরাসরি তুষার নেই, তবে সহীহ হাদীস (নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বাণী ও কর্মের বিবরণ) অনুসারে, তিনি বিভিন্ন দোয়ায় 'বরফ' (থালজ - ثَلْج) এবং 'শিলা' (বারাদ - بَرَد) শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ, জানাজার নামাজে মৃত ব্যক্তির জন্য দু'আয় তিনি বলতেন: হে আল্লাহ! তাকে পানি, বরফ ও শিলা দিয়ে ধুয়ে দিন।

তাই বলা যায়, কোরআনে সরাসরি 'তুষারঝড়' উল্লেখ না থাকলেও, এটি শিলাবৃষ্টি বা বরফের টুকরা বর্ষণের কথা বলেছে যা একই আবহাওয়াজনিত ঘটনার সাথে সম্পর্কিত।

পাপ মোচনের দোয়া: নবীজি (সাঃ) একটি প্রসিদ্ধ দোয়ায় পাপ মোচনের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করতেন।

"হে আল্লাহ! আমার পাপগুলো থেকে আমাকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দিন, যেমন আপনি বরফ (থালজ), পানি ও শিলা (বারাদ) দিয়ে ময়লা দূর করেন।" (সহীহ বুখারী, মুসলিম)

জানাজার দোয়া: জানাজার নামাজে মৃত ব্যক্তির জন্য দু'আয় তিনি বরফ এবং শিলাকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

"হে আল্লাহ! তাকে পানি, বরফশিলা দিয়ে ধুয়ে দিন।" (সহীহ মুসলিম, জানাইয, ৮৫)

কোরআন: কোরআনে সরাসরি 'তুষারঝড়' বা 'বরফ' শব্দটি না থাকলেও, সূরা আন-নূর এর ৪৩ নং আয়াত-এ শিলাবৃষ্টি বা বরফের টুকরা ('বারাদ') বর্ষণের মাধ্যমে এই প্রাকৃতিক ঘটনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

হাদিস: নবী (সাঃ)-এর হাদিসগুলোতে 'তুষার' (থালজ) এবং 'শিলা' (বারাদ) উভয় শব্দেরই স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন