মঙ্গলবার
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জান্নাতে স্বামী-স্ত্রী কি একসঙ্গে থাকবে? শায়খ আহমাদুল্লাহর ব্যাখ্যা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
শায়খ আহমাদুল্লাহ
expand
শায়খ আহমাদুল্লাহ

মৃত্যু এমন এক অনিবার্য সত্য, যেখান থেকে কোনো প্রাণীই রেহাই পাবে না। জন্ম নিলে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে-এটাই জীবনের অমোঘ নিয়ম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, আর তোমরা তোমাদের কর্মফল পূর্ণরূপে পাবে কিয়ামতের দিনে। (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫, সুরা আনকাবুত: ৫৭)

ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, শক্তিশালী বা দুর্বল, সবার জন্যই মৃত্যুই চূড়ান্ত পরিণতি। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, এখানে সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশা সবই সাময়িক। কিন্তু মানুষ প্রায়ই এই সত্য ভুলে যায় এবং পার্থিব জৌলুসেই ডুবে থাকে। অথচ আল্লাহ তায়ালা সুরা নাহলে সতর্ক করেছেন, যখন নির্ধারিত সময় উপস্থিত হবে, তখন তারা এক মুহূর্তও দেরি বা আগাম করতে পারবে না। (আয়াত: ৬১)

ইসলামী ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মৃত্যুর পর মানুষকে তার চিরস্থায়ী আবাসস্থল দেখানো হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তিকে জানানো হবে-যদি সে জান্নাতি হয়, তবে জান্নাতের ঘর দেখানো হবে, আর যদি জাহান্নামি হয়, তবে জাহান্নামের স্থান। (তিরমিজি: ১০৭২)

এই প্রসঙ্গে অনেকেই জানতে চান, জান্নাতে স্বামী-স্ত্রী কি একসঙ্গে থাকবে?

প্রখ্যাত ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ তার যাচাইকৃত ইউটিউব চ্যানেলে এক আলোচনায় এ বিষয়ে বলেন, জান্নাতে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকবে কি না, তা নির্ভর করবে উভয়ে জান্নাতে যাওয়ার মতো আমল করেছেন কি না, তার ওপর। উদাহরণ হিসেবে ফেরাউন ও তার স্ত্রী হজরত আছিয়াকে কোরআনে আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেছেন, ফেরাউন জাহান্নামে যাবে, কিন্তু আছিয়া জান্নাতে প্রবেশ করবেন। একইভাবে নবী নূহ (আ.) ও লূত (আ.) জান্নাতি হবেন, তবে তাদের স্ত্রীগণ ইমান না আনায় জাহান্নামে যাবেন।

তিনি আরও বলেন, কেউ জান্নাতে গেলে তার সঙ্গী স্বয়ংক্রিয়ভাবে জান্নাতে যাবে-এ ধারণা ভুল। বরং যার আমল ও ঈমান অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা বিচার করবেন, সে অনুযায়ীই তাদের গন্তব্য নির্ধারিত হবে।

এখন প্রশ্ন আসে-যদি এক জন জান্নাতে আর অন্যজন জাহান্নামে যায়, তবে জান্নাতি সঙ্গী কি কষ্ট পাবেন না?

শায়খ আহমাদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, আখিরাতের জীবন দুনিয়ার জীবনের মতো নয়। সেখানে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতিদের হৃদয় থেকে সব কষ্ট ও দুঃখ মুছে দেবেন। তাই তাদের কেউই প্রিয়জনের বিচ্ছেদে কষ্ট পাবেন না। আল্লাহর রহমতে তারা সম্পূর্ণ শান্তি ও প্রশান্তিতে থাকবে।

তিনি উপসংহারে বলেন, “মৃত্যু অনিবার্য-এ কথা স্মরণ রেখে আমাদের উচিত ঈমান ও সৎ আমলে জীবন গড়া, যেন পরকালে আমরা জান্নাতের সুখভোগীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X