

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ঘোষিত ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নেই দলের বহু পরিচিত ও হেভিওয়েট নেতার নাম।
মনোনয়ন থেকে বাদ পড়লেও এসব নেতা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করছেন না; তবে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভও হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ক্ষোভে বিএনপি নেতৃত্ব কিছুটা চাপে পড়েছে। বিশেষ করে মাদারীপুর–১ আসনের প্রার্থীর নাম গতকাল স্থগিত করা হয়েছে। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এটি কেবল প্রাথমিক তালিকা—পর্যালোচনা চলছে এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন আসবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
গত সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। ঘোষিত তালিকায় বাদ পড়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আসলাম চৌধুরী, উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জয়নুল আবেদীন, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, হুমায়ুন কবির, সাবেক সাংসদ রুমিন ফারহানা, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাবেক মেয়র আরিফুল হক, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাইসহ অনেকেই।
মনোনয়ন না পাওয়া নেতারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশার কথা জানিয়েছেন। কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নেতাদের পক্ষে সমর্থকদের ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
এক মনোনয়নবঞ্চিত নেতা বলেন, ‘কেন বাদ পড়েছি জানি না। এসব নিয়ে কথা বলতেও ইচ্ছা করছে না।’
সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই তালিকাটি প্রাথমিক পর্যায়ের। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আসতে পারে—কেউ বাদ পড়তে পারেন, কেউ যুক্তও হতে পারেন। তাই এটি চূড়ান্ত নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তালিকাটি সম্ভাব্য। প্রয়োজনে স্থায়ী কমিটি নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তফসিল ঘোষণার পরই চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার) রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মাদারীপুর–১ আসনের প্রার্থীর নাম স্থগিত করা হয়। এতে ৩০০ আসনের মধ্যে এখনো ৬৪টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি রয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে ৪০টি আসন শরিকদের জন্য রাখা হতে পারে, বাকিগুলো দলেরই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে নির্ধারিত হবে।
দলের মনোনয়ন কমিটির এক সদস্য বলেন, প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা মানেই চূড়ান্ত নয়। তাঁদের আচরণ, সংগঠনের প্রতি আনুগত্য ও মাঠপর্যায়ের অবস্থানও বিবেচনা করা হবে। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে তাঁর স্থানে নতুন প্রার্থী আসতে পারে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রার্থীরা সামনে
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় দলের প্রয়াত ও প্রবীণ নেতাদের সন্তানদেরও উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। রাজনীতিতে সক্রিয় ও অভিজ্ঞ এই তরুণ প্রজন্মের অনেকে আগেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমির (পঞ্চগড়–১), প্রয়াত মন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল (নাটোর–১), প্রয়াত মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (যশোর–৩), প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন (ঢাকা–৬), প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ (ফরিদপুর–২), প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান (মৌলভীবাজার–৩), প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম–৭), প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান (গাজীপুর–৪), প্রয়াত শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খান (মানিকগঞ্জ–২), শেরপুরের তিন আসনে মাহমুদুল হক রুবেল, ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী ও সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা, এবং গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম. মঞ্জুরুল করিম রনি।
সূত্র, আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
