

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দলীয় সূত্রে জানানো হয়, ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
মৃত্যুর সময় এভারকেয়ার হাসপাতালে তার পাশে উপস্থিত ছিলেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান, ছোট ছেলের স্ত্রী শার্মিলী রহমান সিঁথি, তার ছোট ভাই শামীম এসকান্দার ও তার স্ত্রী, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্যও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, মরহুমার জানাজার নামাজ ও দাফনসংক্রান্ত সময়সূচি পরে জানানো হবে।
এর আগের দিন সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে ‘চরম সংকটাপন্ন’ বলে উল্লেখ করেছিলেন অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের জানান, মেডিকেল বোর্ডের পর্যালোচনায় বোঝা গেছে—তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার করছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই বেগম খালেদা জিয়া হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনি জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেতাকর্মীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে খালেদা জিয়া ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলে যোগ দেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে অপসারণ করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালের মার্চে খালেদা জিয়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন।
বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেগম খালেদা জিয়া। তার নেতৃত্বেই পরবর্তী কয়েক দশকে বিএনপি দেশের রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন

