

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


প্রায় ১৩ বছর বন্ধ থাকার পর আবারও খুলতে যাচ্ছে ঢাকা–করাচির আকাশপথ। শেখ হাসিনা সরকারের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন চলতি নভেম্বরে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন।
দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে পাকিস্তানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী করাচির সঙ্গে নতুন করে আকাশ যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমবাজার, যাত্রীসেবা ও কার্গো পরিবহনে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীচাহিদা, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শ্রমবাজারের সম্ভাবনা এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় রুটটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করাচি একসময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ছিল। তবে ২০১২ সালে নিরাপত্তাজনিত কারণ উল্লেখ করে ঢাকা–করাচি রুটটি বন্ধ করা হয়।
পাকিস্তান সফরে বিমান উপদেষ্টা দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ (সিসিএ), বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা এবং করাচির বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, কার্গো পরিবহন, শ্রমবাজার সম্ভাবনা, বিমান চলাচল সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানো—এগুলোই আলোচনার মূল বিষয় হবে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের সঙ্গে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক নাদির শাফি দার সাক্ষাৎ করেন। বেবিচক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পুনরায় চালুর বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
বিমান সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে তিন দিন ঢাকা–করাচি–ঢাকা রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাত্রীর সাড়া ও বাণিজ্যিক চাহিদা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। বিশেষ করে করাচিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, ট্রানজিট যাত্রী ও প্রবাসীদের জন্য এটি অত্যন্ত সহায়ক হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার বোশরা ইসলাম বলেন, আপাতত সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও চলছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। করাচি রুটটি পুনরায় চালু হলে দেশের পোশাক, ওষুধ, জাহাজ নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতের রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠনগুলোও এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। ব্যবসায়ী মহল বলছে, করাচিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে আমদানি-রপ্তানি খরচ কমবে, ট্রেড মিশনের কার্যক্রম সক্রিয় হবে এবং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে।
উল্লেখ্য, একসময় করাচি রুটটি ছিল বিমান বাংলাদেশের অন্যতম লাভজনক গন্তব্য। করাচি, লাহোর ও ইসলামাবাদে নিয়মিত ফ্লাইট চললেও যাত্রীপ্রবাহের কারণে করাচিই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট।
মন্তব্য করুন
