

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সম্প্রতি সঞ্চয়পত্রের সার্ভার হ্যাক করে ২৫ লাখ টাকা তুলে নেয় অপরাধীরা। এরপর নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে কেপিআই অন্তর্ভূক্ত। এই সংস্থার নিরাপত্তা বিধানে মতিঝিল অফিসে ৫টি সেবা বন্ধ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ শেষ কার্যদিবস হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে ওই ৫ সেবা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সঞ্চয়পত্র বিক্রি (আদান) কাউন্টার বন্ধ করতে যাচ্ছে মতিঝিল অফিস। এই শাখায় নগদ টাকায় সঞ্চয়পত্র ক্রয়সেবা প্রদান করা হয়। জনসাধারণের জন্য প্রাইজবন্ড বিক্রয় কাউন্টারও বন্ধ করা হচ্ছে। এই কাউন্টার থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর কাছে প্রাইজবন্ড বিক্রি করা হয়।
এছাড়া সরকারের পক্ষে ট্রেজারি চালান গ্রহণ করার পিএডি আদানের তিনটি কাউন্টারও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চালান কাটতে গিয়ে ভাংতি টাকার প্রয়োজন হলে যে কাউন্টার থেকে ভাংতি টাকা সরবরাহ করা হয় সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
সবচেয়ে জরুরি যে সেবা জনসাধারণ বেশি ব্যবহার করতো সেটি হলো ছেড়া-ফাটা, ত্রুটিযুক্ত নোট বিনিময় কাউন্টার। এখানে ৬টি কাউন্টারে এই সেবা প্রদান করা হতো। যার সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই কাউন্টারগুলোতে সরাসরি পরিশোধযোগ্য ত্রুটিমুক্ত কারেন্সি নোটের বিনিময় মূল্য পরিশোধ করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ২৮টি কাউন্টার থেকে ১০টি সেবা প্রদান করা হতো। এবার তা কমে ১৬টি কাউন্টার থেকে ৫টি সেবা প্রদান করা হবে। আর বাকি ৫টি সেবা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ৩০ নভেম্বর।
কাউন্টার বন্ধ করে সেবাপ্রদান বন্ধ করা শুধুমাত্র মতিঝিল অফিসেই নয়, অন্যান্য অফিসেও এ সেবাসমূহ বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ও দাপ্তরিক কাজগুলো করার জন্য প্রাইজবন্ড, সঞ্চয়পত্র ও চালানের কাজগুলো ১টি কাউন্টার দিয়ে লেনদেন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দেশের কেপিআই নীতিমালা ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ নিরাপত্তা স্তরের প্রতিষ্ঠান। এখানে টাকা তালিকাভূক্ত করা ও বিনিময় করা হয়। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংক্রান্ত কাজ, ভল্ট ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাছাড়া দেশের সমস্ত আর্থিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ চুরির মত ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। কয়েকদিন আগে সঞ্চয়পত্রের সার্ভার হ্যাকের মত ঘটনাও ঘটেছে। অথচ দেশে ৬০টি তফসিলি ব্যাংক আছে। যারা এই সেবাগুলো দিয়ে থাকে। এসব ব্যাংকগুলোতে এই সেবা প্রদান করা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা যাবে। পাশাপাশি গ্রাহকদের কষ্ট করে আর দূরদূরান্ত থেকে মতিঝিলে আসতে হবে না। জনগণের অবাধ প্রবেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেইন খান এনপিবি নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনস্ত যে কোনো শাখা কিংবা ব্যাংককে নির্দেশনা দিতে পারে। কিন্তু এই সেবা ও কাউন্টারগুলো বন্ধ হচ্ছে নিরাপত্তার সংক্রান্ত কারণে বিষয়টি আমার জানা নেই। যদিও দেশের অন্যান্য প্রায় সবগুলো ব্যাংকেই একই সেবা দেওয়া হয়। সে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এসব কাজে ব্যস্ত না রেখে অন্যান্য কাজে নিয়োজিত করা যেতে পারে। তাতে সেবা প্রদান আরো সহজ হবে।’
মন্তব্য করুন