

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন আবারও খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। আগামী শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে নির্দিষ্ট শর্তে সেখানে যেতে পারবেন দর্শনার্থীরা। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি।
সরকারের নির্দেশনাগুলো হলো— ১️ বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিন দ্বীপে চলাচল করতে পারবে না।
২️ পর্যটকদের টিকিট অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত অনলাইন পোর্টাল থেকে কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কোডবিহীন টিকিট অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে।
৩️ ভ্রমণ সময়সূচি ও দর্শনার্থীর সংখ্যা এবার কড়াভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪️ নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় দ্বীপে ভ্রমণ করা যাবে, রাত যাপন নিষিদ্ধ।
৫️ ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত পরিসরে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
৬️ ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে সকল পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকবে।
৭️ প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন।
৮️ রাতে সৈকতে আলোকসজ্জা, উচ্চ শব্দ বা বারবিকিউ আয়োজন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যাতে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ণ থাকে।
৯️ কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া ও শামুক-ঝিনুকের ক্ষতি করা যাবে না। এসব কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।
১১️পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক— যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান-শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল— বহন করা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
১২️ পর্যটকদের নিজস্ব রিফিলযোগ্য পানির ফ্লাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এবার নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপত্তার কারণে এবার পর্যটকবাহী জাহাজ টেকনাফ নয়, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে চলাচল করবে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, সব পর্যটককে ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে টিকিট নিতে হবে। প্রতিটি টিকিটে কিউআর কোড ও ট্রাভেল পাস থাকবে— এগুলো ছাড়া কেউ দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবে না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গত ৯ মাস পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এখন সৈকতে শামুক-ঝিনুকের বৃদ্ধি, লাল কাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ ও মা কাছিমের ডিম পাড়ার দৃশ্য আবার ফিরে এসেছে।
সরকারি সংস্থাগুলোর আশা, এবার নতুন নিয়ম-কানুন মেনে চললে সেন্টমার্টিন আবারও টেকসই পর্যটনের আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠবে।
মন্তব্য করুন
