

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


দাম্পত্য জীবনে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা আনন্দের হলেও এটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল একটি সিদ্ধান্ত। শুধু পরিবার বা সমাজের চাপে নয় দুশ্চিন্তা, প্রস্তুতি ও বাস্তবতা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। নইলে ভবিষ্যতে সম্পর্ক, মানসিক চাপ ও পারিবারিক অস্থিরতার ঝুঁকি থেকে যায়। তাই বাবা-মা হওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গভীরভাবে ভেবে দেখা প্রয়োজন।
১. সম্পর্কের স্থিতিশীলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
অনেকে মনে করেন সন্তান এলে দাম্পত্য জীবনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে এ ধারণাটি ভুল। বরং অমীমাংসিত বিরোধ বা দূরত্ব থাকলে সন্তান লালন-পালনের চাপ সম্পর্ককে আরও দুর্বল করে। তাই আগে সম্পর্কটি বিশ্বাস, বোঝাপড়া ও মানসিক সমর্থনের জায়গায় আছে কি না, তা যাচাই করা জরুরি।
২. সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেরা চাপ থেকে নয়
আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা সামাজিক মতামত বিবেচনায় সন্তান নিলে পরে অনুশোচনা তৈরি হতে পারে। দু’জনেরই মানসিক প্রস্তুতি ও ইচ্ছা থাকা সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। যখন দু’জনই একই জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, তখনই স্বস্তিদায়ক একটি শুরু হবে।
৩. শারীরিক প্রস্তুতি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
গর্ভধারণের আগে নারী-পুরুষ উভয়েরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপনে পরিবর্তন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা ভালো। এতে গর্ভধারণ, গর্ভকালীন সময় ও শিশুর জন্ম সব পর্যায়ে ঝুঁকি কমে যায়।
৪. আর্থিক স্থিতি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
সন্তানের লালন-পালন কয়েক মাসের বিষয় নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যয় শিক্ষা, চিকিৎসা, দৈনন্দিন প্রয়োজন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবই মাথায় রাখতে হয়। তাই দুইজন মিলে নিজের বর্তমান আয়-ব্যয় ও ভবিষ্যৎ আর্থিক স্থিতি বাস্তবসম্মতভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি। অর্থনৈতিক প্রস্তুতি না থাকলে ভবিষ্যতে মানসিক চাপ ও সম্পর্কের টানাপড়েন বাড়তে পারে।
৫. কাজ ও শিশুর দায়িত্ব ভাগাভাগি
আজকের দিনে বেশিরভাগ দম্পতিই কর্মজীবী। তাহলে সন্তানের দেখাশোনা কে করবে? আত্মীয়রা সাহায্য করতে পারবেন কি? নাকি ডে-কেয়ারের প্রয়োজন হবে? এসব বিষয় আগে থেকেই স্পষ্টভাবে আলোচনা করা জরুরি। দায়িত্ব ভাগাভাগির পরিকল্পনা না থাকলে পরে বিরোধ বা দোষারোপ বাড়তে পারে।
শেষ কথা
সন্তান জন্মানোই সব নয়; তাকে মানুষ করে তোলা একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি। তাই মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক প্রস্তুতি যাচাই করে, দু’জনের সম্মতিতে এবং পরিণত চিন্তা-ভাবনা করেই নতুন অধ্যায়ের যাত্রা শুরু করা উচিত।
মন্তব্য করুন
