

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাক্ষী হাজির না হওয়ায় আবারও পিছিয়েছে সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম। নতুন করে আগামী ১০ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও নির্ধারিত সাক্ষীরা উপস্থিত না হওয়ায় আদালত নতুন তারিখ ঠিক করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
অন্যদিকে, কনস্টেবল সুজনের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, “সাক্ষী হাজির না হওয়ার বিষয়টি প্রসিকিউশনের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক। যাদের সাক্ষী করা হয়েছে, তাদের সময়মতো হাজির করানোই প্রসিকিউশনের দায়িত্ব। এ ব্যর্থতা তাদেরই।”
এর আগে গত ১৩ অক্টোবরও সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সেদিনও সাক্ষী হাজির করতে না পারায় প্রসিকিউশন সময় চেয়ে আবেদন করে। প্রসিকিউটর মঈনুল করিম তখন জানান, “সাক্ষী অসুস্থ থাকায় হাজির হতে পারেননি, আর বাকি প্রসিকিউটররা ট্রাইব্যুনাল-১-এর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই ২০ অক্টোবরের পর সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে চাই।”
সেই সময় ট্রাইব্যুনাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, “আপনারা যদি সাক্ষী হাজির করাতে না পারেন, তাহলে এটি আদালত অবমাননার শামিল। যদি ব্যস্তই থাকেন, তাহলে দুটি ট্রাইব্যুনাল চালানোর যৌক্তিকতা কোথায়? প্রয়োজনে আপনাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু করা যেতে পারে।”
গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের শুনানিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা—এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল—জবানবন্দি দেন। তারা জব্দ তালিকার সাক্ষী ছিলেন। পরে গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন।
সেদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মঈনুল করিম, আবদুস সোবহান তরফদার ও সুলতান মাহমুদ।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জন আসামি হলেন—এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম. কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল, আনোয়ার পারভেজ।
মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয় ২৭ আগস্ট, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে। এর আগে ৬ আগস্ট, ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা। পাঁচজনের পক্ষে বক্তব্য দেন সুজাত মিয়া, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কয়েকজনের পক্ষে ছিলেন মামুনুর রশীদ, আর ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলামও শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগের দিন, ২৯ জুলাই, তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। সেখানে শরিফুল ইসলামের হয়ে লড়েন আমিনুল গণি টিটো, কনস্টেবল সুজনের পক্ষে ছিলেন আজিজুর রহমান দুলু, আর ইমরান চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন সালাহউদ্দিন রিগ্যান।
প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয় ২৮ জুলাই, আর ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগপত্র আমলে নেয়। ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
এই মামলায় মোট ৬২ জন সাক্ষী তালিকাভুক্ত আছেন।
মন্তব্য করুন
 
                    