

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এর আগে এ মামলায় ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির এবং মা হাসি বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার পৃথক দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা জবানবন্দি দেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর গত ১৫ ডিসেম্বর সামিয়াসহ তিন জনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। গত ২০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাদের আরও চার দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।
বুধবার রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ফয়সাল আহমেদ।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে সামিয়া ও সিপু এবং আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে মারিয়া জবানবন্দি প্রদান করে। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান।
এদিকে এদিন ফয়সাল করিম মাসুদকে সীমান্তে আত্মগোপনে সহায়তাকারী আমিনুল ইসলাম রাজুকে দুপুর দেড়টার দিকে মিরপুর -১১ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি নিয়ে সন্ধ্যায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড দেন ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদ।
তবে রাজুকে দেরিতে আদালতে উপস্থাপন করায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ব্যাখা চেয়েছে আদালত। আগামি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাত করে আসামিদের আদালতে হাজির করার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি প্রসিকিউশন বিভাগের কর্মকর্তা এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার ইনচার্জকেও শোকজ করা হয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটিতে ৩০২ ধারা যুক্ত হয়েছে।
মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপর আসামিরা হলেন- রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী মুফতি মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ভারতে পালাতে সহযোগিতাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
জুলাই অভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার গণসংযোগের জন্য বিজয়নগর এলাকায় গিয়ে তিনি আক্রান্ত হন।
চলন্ত রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করেন চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা আততায়ী। গুলিটি লাগে হাদির মাথায়।
গুরুতর আহত হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচার করার পর রাতেই তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে বৃহস্পতিবার মারা যান হাদি।
গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কথিত জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা জান্নাত সুরভী (২১) গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের ও সেনাবাহিনী প্রধানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে বারোটার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার গোপালপুর টেকপাড়া এলাকার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুরভী ওই এলাকার সেলিম মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ জানায়, সুরভীর বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় নাইমুর রহমান দুর্জয় নামের এক যুবকের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। মামলায় চাঁদাবাজি, অপহরণ করে অর্থ আদায় ও ব্ল্যাকমেইলিং-এর মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তিনি সেনাবাহিনী প্রধানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন বলেও দাবি পুলিশের।
উল্লেখ্য, গ্রেফতার তাহরিমা জান্নাত সুরভী নিজেকে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
অভিযান শেষে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন

