

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


চরম শিক্ষক সংকটে পড়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রায় দশটিরও অধিক বিভাগ। প্রায় আট মাস আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিভাগগুলো।
এতে মানসম্পন্ন শিক্ষা হতে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা তেমনি একেকজন শিক্ষককে নিতে হচ্ছে অসহনীয় চাপ। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই তৈরি হচ্ছে সংকট।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৭টি ব্যাচের প্রায় ৩৫টি কোর্স, ৪ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের ৫টি ব্যাচের প্রায় ৩০টি কোর্স।
নার্সিং এন্ড হেল্থ সাইন্স বিভাগের ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ৬টি ব্যাচ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৪ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ৫টি ব্যাচ, একইভাবে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগ চলছে ২ জন শিক্ষক দিয়ে, এপ্লাইড স্টাটিসটিক্স এন্ড ডাটা সাইন্স বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় চলছে অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে।
এছাড়া মার্কেটিং বিভাগে ৬ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে ৬টি ব্যাচ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের ৬ জন শিক্ষক দিয়ে ৫টি ব্যাচ সহ আরও একাধিক বিভাগে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের মে এবং জুন মাসে ২টি পৃথক শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কিন্তু কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হলেও বেশিরভাগ বিভাগে অজানা কারণে নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের বিভাগে বর্তমানে ৭টি ব্যাচের বিপরীতে মাত্র ৩ জন শিক্ষক রয়েছেন।
শিক্ষকেরা আমাদের ক্লাস নিবেন না পরীক্ষার হলে গার্ড দিবেন? ক্লাস পরীক্ষা নিতে শিক্ষকদেরকে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে।প্রশাসনের কাছে জানতে চাই আর কতদিন গেলে বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে?
নার্সিং এন্ড হেল্থ সাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম বলেন, শিক্ষক না থাকার কারণে আমাদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নিয়মিত ক্লাস হয় না, সময় মত কোর্স শেষ হচ্ছে না, নার্সিং এর প্রধান বিষয়গুলো বাহিরের শিক্ষকদের নিতে হচ্ছে, বিভিন্ন বিভাগে ঘুরে ঘুরে ক্লাস করতে হয়, কোন রুটিন ছাড়াই ক্লাস করতে হয়।
যার ফলে সেশনজট তৈরি হচ্ছে। সেশনজটের কারণে সময়মতো লাইসেন্সিং পরীক্ষায় বসতে পারছি না আমরা, ফলে চাকরির বিজ্ঞপ্তি পেলেও আমরা আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়োগের ব্যাপারে আরও আন্তরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, প্রকৃতপক্ষে শিক্ষক সংকট দূর করতে হলে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন করেও যারা নতুন করে শিক্ষা ছুটিতে গিয়েছেন তাদের বিপরীতেও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া জরুরি। না হলে শিক্ষক সংকট কাটবে না।
কারণ কিছু কিছু বিভাগের প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষক বাইরে অবস্থান করছেন। সেখানে আমাদের প্রশাসন এই দেড় বছরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া পদগুলোতেই অজানা কারণে নিয়োগ সম্পন্ন করেনি।
একজন শিক্ষক শুধু ক্লাস নেন না, ক্লাস টেস্ট, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, খাতা দেখা, গবেষণা করা, অনেক কিছু করতে হয়। সেখানে এত ক্লাস লোড থাকলে গুনগত মান ধরে রাখা সম্ভব নয়। প্রশাসনকে এ সংকট উপলব্ধি করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন
