

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন-মহাসচিব ও রাকসু'র সাবেক ভিপি অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জুলাই সনদের আইনী বৈধতার কথা বলছে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল। কেউ কেউ বলছে, জুলাই সনদ পাস না হলে ২০২৯ সালে নির্বাচন হবে। এগুলোতো ফ্যাসিবাদী কণ্ঠস্বর, ফ্যাসিবাদী আওয়াজ। কেনো আপনারা সেই কথা বলছেন? এটাতো খুবই রহস্য তৈরী করছে।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) টিএসসিসিতে রাবি শাখা ছাত্রদল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটা জিনিস সবাই মিলে করেছেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা ছিলেন, সবাই মিলে একটি জায়গায় আসুন যাতে একইদিনে নির্বাচন এবং গণভোট করা যায়। এতে জুলাই সনদেরও আইনীকরণ করা হবে এবং জনগণ যাদের ভোট দিবে, তারা সরকার গঠন করবে। কিন্তু এটা নিয়ে আগেই এতোবেশি হইচই করে যে কাজগুলো হচ্ছে, তাতে কিন্তু ফ্যাসিস্টদেরই পুনরুত্থান ঘটতে পারে। এব্যাপারে গণতান্ত্রিক শক্তি সজাগ নাহলে জাতির কপাল খুব একটা ভালো হবে আমি মনে করি না।
জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে তিনি বলেন, ১৯৭২ এর পর থেকে আত্মপরিচয়ের সংকট তৈরী করেছিল শেখ মুজিবুর রহমান। আত্মপরিচয়ে নিয়ে তখন বিতর্ক তৈরী হয়েছিল। এই বিতর্ক নিরসন করতে পারেনি শেখ মুজিবুর রহমান। সবাইকে বলেছিল, "বাঙালি হয়ে যাও।" কিন্ত বাঙালিতো অন্য দেশেও রয়েছে। তখনতো প্রশ্ন আসে কোন দেশের বাঙালি। উপজাতি নেতাদেরকেও বলেছিল, "তোরাও বাঙালি হয়ে যা।" নৃতাত্ত্বিক পার্থক্য এক হবে কী করে? বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ধারণা দিয়ে এই বিতর্কের নিরসন করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ডাকসু'র নির্বাচিত প্রার্থীরা বিশেষ করে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ প্রত্যেকে বিগত ফ্যাসিবাদী আমল থেকেই হলে থাকতেন এবং তৎকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। অপরদিকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার কারণে ছাত্রদলসহ অন্য ছাত্র সংগঠনের কেউ তৎকালীন হলে থাকতে পারেনি। ফলে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা বলে আসছিলাম, একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই তারা করতে পারেনি।
তিনি বলেন, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়েও যারা ভিপি-জিএস নির্বাচিত হয়েছে, তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। ফলে আমরা দেখেছি, ভিপি-জিএস হতে হলে পূর্বে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে এমন একটা অবস্থা দেখেছি। তবে শিক্ষার্থীরা হয়তো ভোট দিয়েছেন অথবা অনিয়ম হয়েছে। তবে যেটাই হয়ে থাকুক, ছাত্রদল সবসময় ন্যায়, গণতন্ত্র ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়মে ভরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোতে হয়তো ছাত্রদল প্রত্যাশিত ফলাফল করতে পারেনি। বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পরেও আমরা বলেছি ছাত্রদলের আরও ভালো করা উচিত ছিল। আমরা যে চারটি ছাত্র সংসদে পরাজিত হয়েছি, এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিগত সময়ে সকল অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদ করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছে এবং ১৪২ জন নেতাকর্মী শহিদ হয়েছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল ইসলাম। সভায় রাবি শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টন মোড়ে ৮ দলের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী গণভোট না হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে।
মন্তব্য করুন