

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন খাদিজাতুল কুবরা—যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাইবার সিকিউরিটি মামলায় ১৫ মাস কারাগারে ছিলেন।
সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তবে এ বিষয়টি তাকে নেতিবাচকভাবে আঘাত করেছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি নিজের বিষয়ে নোংরামি ও অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য বন্ধ করার আহ্বান জানান।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, যতদিন পর্যন্ত আমি রাজনীতিতে আসিনি, ততদিন পর্যন্ত আমি ভালো ছিলাম। আর এখন একমাসেই আমার এতো দোষ, আমি খারাপ হয়ে গেলাম?
তিনি আরও লেখেন, এসেছিলাম পরিবর্তন করতে। কিন্তু, এইসব নোংরামির কারণে বুঝতে পারছি কেনো মেয়েরা এই সেক্টরে আসে না বা আসতে চায় না। অনলাইনে ফেক আইডি, স্লাট শেমিং, বট আইডি, ব্যাশিং সবকিছুই না হয় বুঝলাম। মেনেও নিলাম। কিন্তু, সাংবাদিকরা? একেকজন কল দিয়ে এতো মিথ্যা অপবাদ, উল্টাপাল্টা প্রশ্ন আর মানসিক প্রেসার নিতে পারছি না।
খাদিজা লেখেন, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একজন কল দিয়ে যখন কথায় পারে না, শুনি পাশ থেকে আরেকজন শিখিয়ে দিচ্ছে! এসময় তিনি সাংবাদিকদের লিবারেল থাকার আহ্বান জানান। নির্দিষ্ট কোনো দলের হয়ে কাজ না করার অনুরোধও করেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৫ মাস কারাগারে থেকেও এতোটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হইনি, যতটা গত কিছু দিনে হয়েছি। আমি কারও সঙ্গে কখনও খারাপ কিছু করিনি। আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা আমাকে নিয়ে নোংরামি করিয়েন না প্লিজ! ‘এসব লোকদের ব্যাপারে স্টেপ নেয়ার কি কেউ নেই’ বলে স্ট্যাটাস শেষ করেন খাদিজা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ( জবি) ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নূর নবী অনেক দিন ধরে ‘অস্টিওসারকোমা’ নামের অস্থি ক্যান্সারে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়।
তবুও তিনি পড়াশুনার হাল ছাড়েননি। প্রতিদিন সাভার থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সপ্তম সেমিস্টারের পড়াশোনাও সম্পন্ন করেছেন। চিকিৎসকরা দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে।
নূর নবীর চিকিৎসার জন্য কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চ্যারিটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়। এসময় কনসার্ট মঞ্চে উঠে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা ঘোষণা দেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ক্যান্সার আক্তান্ত নূর নবীর জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আমি ৫০ হাজার টাকা ফান্ড রেইজ করেছি। আপনারা সবাই আমাকে দোয়ায় রাখবেন, যাতে ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে থাকতে পারি।’
মূলত, এই অনুদান নিয়েই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে। কারণ বলা হচ্ছে, কনসার্টের অনুমতিপত্রে নির্বাচন কমিশনের শর্ত ছিল, ‘কনসার্টের মঞ্চে কোনো স্বতন্ত্র/প্যানেলের প্রার্থী উপস্থিত থাকতে পারবে না।
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের অক্টোবরে অনলাইনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রচার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় তিনি প্রায় ১৫ মাস কারাগারে ছিলেন।
মন্তব্য করুন
