

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে অবস্থিত জমিদার বাড়িটি দেশের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা। স্থানীয়দের কাছে এটি পরিচিত ‘নবাব প্যালেস’ বা ‘নবাব মঞ্জিল’ নামে। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও চুন-সুরকির এই প্রাসাদ আজও ইতিহাস আর ঐশ্বর্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শতবর্ষী দেয়ালগুলোয় খোদাই হয়ে আছে অতীতের ঐতিহ্য।
ইতিহাস ও উত্তরাধিকার
ধারণা করা হয়, মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় সেনাপতি ইস্পিঞ্জর খাঁ ও মনোয়ার খাঁ ধনবাড়ীতে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের বংশধর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রথম প্রস্তাবক এবং ব্রিটিশ সরকারের প্রথম মুসলিম মন্ত্রী।
নওয়াব আলী চৌধুরীর মৃত্যুর পর জমিদার বাড়ির দায়িত্ব আসে তাঁর উত্তরাধিকারীদের হাতে। বর্তমানে নবাব পরিবারের সদস্য সৈয়দা আশিকা আকবর ও তাঁর ছেলে আফিফ উদ্দিন আহমাদ এ জমিদার বাড়ি দেখাশোনা করছেন।
স্থাপত্য ও বৈশিষ্ট্য
১৭ একর জমির ওপর স্থাপিত এই জমিদার বাড়ি ১৪ গম্বুজবিশিষ্ট মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন। দক্ষিণমুখী প্রাসাদটির সামনে রয়েছে দীর্ঘ বারান্দা ও বিশাল তোরণ, যা একসময় ব্রিটিশ গভর্নরকে অভ্যর্থনার জন্য নির্মিত হয়েছিল। প্রাচীরঘেরা জমিদার বাড়ির ভেতরে রয়েছে বৈঠকখানা, নায়েবঘর, দাস-দাসীর চত্বরসহ নানা স্থাপনা।
প্রাসাদের পাশেই রয়েছে প্রায় ৩০ বিঘার দিঘি, শান বাঁধানো ঘাট এবং নৌবিহারের সুযোগ। এ ছাড়া জমিদার বাড়ির ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সাত শত বছরের পুরোনো একটি মসজিদ, যা দেড়শ বছর আগে নবাব পরিবার সংস্কার করে।
পর্যটন কেন্দ্র
অপূর্ব স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ধনবাড়ী জমিদার বাড়ি আজ পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। উত্তরাধিকারীরা এখানে গড়ে তুলেছেন ‘নবাব সৈয়দ হাসান আলী রয়্যাল রিসোর্ট’, যা এখন পিকনিক ও ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।
ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ জমিদার বাড়ি এখনো বহন করে চলেছে টাঙ্গাইলের দুই শত বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাক্ষ্য।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    