শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামীর স্বীকৃতি চেয়ে তরুণীর অনশন, ছেলে পলাতক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
দশমিনা উপজেলায় সংসারের অধিকার দাবিতে প্রাক্তন স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছেন এক তরুণী।
expand
দশমিনা উপজেলায় সংসারের অধিকার দাবিতে প্রাক্তন স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছেন এক তরুণী।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় তালাকের পরও স্বামীর স্বীকৃতি ও সংসারের অধিকার দাবিতে প্রাক্তন স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছেন এক তরুণী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষীপুর গ্রামে। অনশনরত তরুণীর নাম উর্মি আক্তার (২০)। তিনি বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বড়গোপালদী গ্রামের জাফর প্যাদার মেয়ে। তার প্রাক্তন স্বামী মো. রিয়াদ হোসেন (ডাকনাম জাহিদুল) একই উপজেলার উত্তর লক্ষীপুর গ্রামের কাশেম খানের ছেলে।

তরুণীর অনশনের খবরে ছেলে পলাতর রয়েছে। এখনও তার খোঁজ মেলেনি। এদিকে বাসার বাহিরে স্বীকৃতির দাবীতে সকাল গড়িয়ে রাত হলেও অনড় অবস্থানে তরুণী। তার নিরাপত্তায় সর্বাত্মক সহযোগীতা এবং খোঁজখবর রাখছেন দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উর্মি ও রিয়াদের মধ্যে প্রায় আট মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। পরে চলতি বছরের ৬ অক্টোবর তারা পটুয়াখালী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে বিয়ের চার দিন পর পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর থেকেই মেয়েটি আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে মঙ্গলবার সকালে রিয়াদের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন।

উর্মি বলেন, “আমরা দুজন ভালোবেসে বিয়ে করেছি। বিয়ের পরে একসঙ্গে থেকেছি। কিন্তু বিয়ের পর পরিবার সম্পর্কটি মেনে নেয়নি। এখন আমার যাওয়ার জায়গা নেই। আমি শুধু স্ত্রীর স্বীকৃতি চাই, অন্য কিছু নয়।”

তালাকের অভিযোগ প্রসঙ্গে উর্মির দাবি, “তালাকের কাগজে যে স্বাক্ষর দেখানো হচ্ছে, সেটা আমার নয়। আমি কোনো তালাকনামায় সই করিনি। আমাকে প্রতারণা করে আলাদা করার চেষ্টা চলছে।”

অন্যদিকে, প্রাক্তন স্বামী রিয়াদ হোসেন বলেন, “আমরা দুজনের সম্মতিতেই বিয়ে করেছি। কিন্তু পারিবারিক কারণে বিয়ের চার দিন পর তালাক হয়। ফেসবুকে জেনেছি, সে আমার বাড়ির সামনে অনশন করছে।”

রিয়াদের বাবা কাশেম খান বলেন, “ছেলের বিয়ের বিষয়টি আমরা জানতাম না। এখন যা হচ্ছে, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

এদিকে, ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয়রা মানবিক বিবেচনায় বিষয়টির দ্রুত সমাধানের কথা বলছেন। এভাবে চলতে থাকলে সামাজিকভাবে নেগেটিভ প্রচারণা ছড়াবে। তাতে করে অন্যরাও এ পথে পা বাড়াবে।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, “ঘটনাটি আমাদের জানা আছে। ছেলে ও মেয়ে দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক এবং আইনগতভাবে বিয়ে করেছে। পারিবারিকভাবে সমাধান সম্ভব না হলে আদালতের মাধ্যমে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X