শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩০ কোটি টাকার হাসপাতাল ভবনেও সেবা পাচ্ছে না মানুষ

শাহীন আহমেদ, নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৯ পিএম
সেবা পাচ্ছে না মানুষ
expand
সেবা পাচ্ছে না মানুষ

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চলছে জোড়াতালি আর নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসাসেবা। রোগীরা জায়গা না পেয়ে থাকতে হচ্ছে রুমে ও করিডোরের মেঝেতে।

নতুন ভবনে খালি বেড থাকলেও রোগীরা পুরোনো ভবনে এক বেডে তিন থেকে চারজন বা মেঝেতে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জানা যায়, ২০১৭ সালে সদর জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এরপর ২০১১ সালে শুরু হওয়া ৬ তলা নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ কোটি ৯ লাখ টাকা, পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কিন্তু নির্মাণ শেষের ছয় বছর পরও ভবনের অধিকাংশ অংশ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, নোংরা-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এক রুমে ১০ থেকে ১২ জন রোগীকে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। অথচ নতুন ভবনে শয্যা থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যবহার করা হচ্ছে না, তার জবাব পাচ্ছেন না কেউ। হাসপাতালের এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে বলে জানান তারা।

আফিয়া বেগম বলেন, “বড় বড় বিল্ডিং আছে হাসপাতালে। কিন্তু ভালো চিকিৎসা নেই। এত বড় হাসপাতালে আমাদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। এতো মানুষের ভীড়ে আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমরা বেশি করে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি।”

আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ডাক্তার সময় মত আমাদের দেখতে আসে না। ডাক্তারের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। এদিকে সামান্য ২টা প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের জন্য হাসপাতালের ধুলাভর্তি মেঝেতে দিনের পর দিন থাকতে হচ্ছে।”

আমিনা খাতুন বলেন, “দুই সপ্তাহ ধরে বারান্দায় শুয়ে আছি। ধুলাবালি ও ড্রেনের পচা গন্ধে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। । নতুন ভবনে খালি বেড থাকলেও সেখানে ভর্তি নিচ্ছে না। হাসপাতালের খাবারের মানও ভালো নয়। শুধু তেল আর হলুদ দিয়ে সিদ্ধ করা খাবার।”

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু অবকাঠামো উন্নয়নই যথেষ্ট নয়; প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনাই এ ধরনের সংকটের মূল কারণ। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারাবে জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলো।

তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবু-আল-হাজ্জাজ জানিয়েছেন, “নতুন ভবনে লিফট স্থাপনের কাজ শেষ হলে আগামী মাসে সেখানে সেবা চালু করা হবে। এতে পুরোনো ভবনের রোগীর চাপ অনেকটাই কমে আসবে এবং রোগীদের আর মেঝেতে থাকতে হবে না।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন