শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গয়নার লোভে দাদিকে হত্যা করেছি: নাতনি

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৩ এএম
expand
গয়নার লোভে দাদিকে হত্যা করেছি: নাতনি

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ঘটে গেছে চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকাণ্ড। স্বর্ণালংকারের লোভে নিজের দাদিকে হত্যা করেছেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নাতনি ফাউজিয়া খাতুন (১৯)।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম (সুমন)-এর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত রবিবার রাতে বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌর এলাকার সর্দারপাড়ায় নিজ বাড়িতে ৬৯ বছর বয়সী মমতাজ বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতা প্রয়াত প্রকৌশলী এস. এম. শফিউল্লাহর স্ত্রী ছিলেন। তার মুখে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যায়।

ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে জাকির হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দ্রুত তদন্তে নেমে সন্দেহভাজন হিসেবে বৃদ্ধার ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়াকে আটক করে। তিনি একই এলাকার শাহিনুজ্জামানের মেয়ে।

ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ দেখতে পায়, ঘটনার সময় ফাউজিয়া মমতাজ বেগমের বাড়িতে প্রবেশ করেন। এরপর নাটোর শহরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ফাউজিয়া ও তার স্বামী মিনারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদে ফাউজিয়া হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং জানান, গয়না হাতিয়ে নিতে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফাউজিয়াকে আদালতে হাজির করেন। বিচারক তাকে তিন ঘণ্টা সময় দেন নিজের বক্তব্য প্রস্তুত করার জন্য। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিচারক নিজ কক্ষে ফাউজিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

জবানবন্দিতে ফাউজিয়া বলেন, ঘটনার দিন এশার নামাজের সময় বাড়ির প্রহরী মসজিদে গেলে তিনি দাদির ঘরে প্রবেশ করেন। তিনি সেখানে স্বামীকে নিয়ে রাত্রিযাপন করতে চান, কিন্তু মমতাজ বেগম রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে দাদির মুখে আঘাত করেন।

এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরপর ফাউজিয়া দাদির শরীর থেকে গয়না খুলে নিয়ে পালিয়ে নাটোরে চলে যান।

পুলিশ জানায়, নাটোরে গিয়ে ফাউজিয়া একটি দোকানে গয়না বিক্রি করে নতুন পোশাক কেনেন এবং ঢাকায় পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু তার আগেই পুলিশ তাকে আটক করে।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সারওয়ার বলেন, গয়নার লোভে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো দুঃখজনক। অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন