

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


পারিবারিক কলহের জেরে মাদারীপুর জেলার শিবচরে গভীর রাতে ঘুমন্ত বাবাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ছেলে।
হত্যার পর বাবার মরদেহের পাশে বসে ছিলেন তিনি। পরে ছেলে ফারুক মিয়াকে (২৭) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে তাকে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে বাবাকে হত্যাকারী ছেলে ফারুক (২৭) জবানবন্দিতে লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
নিহত মতিউর ইসলাম চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট থানার হারিয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন।
রাত ১০টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পছন্দের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়নি পরিবার।
যার সঙ্গে পরিবার বিয়ে করিয়েছে সেই স্ত্রীর সঙ্গে রয়েছে বাবার অবৈধ সম্পর্ক। একপর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তবে এতকিছু মেনে নিতে পারেনি ফারুক।
তাই বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। সেই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করতেই বাবাকে নিয়ে কাজের সন্ধানে মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের পঞ্চগ্রামে রসুন বপনের কাজ নেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, রোববার রাতের বেলা বাবা-ছেলে খাবার শেষে এক সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে যায়। রাত ১০টার পর বিছানায় শুয়ে সাবেক পুত্রবধূর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে বাবা মতিউর।
এ সময় পাশের ঘরে বসে সিগারেট খাচ্ছিল ফারুক। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়লে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলে ফারুক। মাত্র আড়াই মিনিটে সর্বমোট ১৭টি কোপ দেয়।
মতিউরের মৃত্যু নিশ্চিত হলে তার লাশের পাশে বসেই সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকে ফারুক।
তিনি আরও জানান, শব্দ পেয়ে পাশের ঘর থেকে বাড়ির মালিকের ছেলে ও আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং মতিউরকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
এ সময় ফারুককে চুপ করে বসে থাকতে দেখে বাড়ির মালিক শিবচর থানায় ফোন দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক ছেলেকে আটক করে।
একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল, ফারুকের রক্তাক্ত জামা-কাপড়সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করে পুলিশ।
মরদেহটি সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় মতিউরের স্ত্রী কোহিনূর বেগম বাদী হয়ে তার ছেলেকে আসামি করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেওয়া শেষে ফারুককে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবাকে হত্যার জন্য আগে থেকেই পাশের রুমে একটি কোদাল লুকিয়ে রেখেছিল ফারুক। অপেক্ষায় ছিল কখন তার বাবা ঘুমাতে যাবে সেই সুযোগের।
মন্তব্য করুন