

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার অঞ্জনগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাতজন শিক্ষককে ব্যাক ডেটে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব শিক্ষকের নিয়োগ ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে হলেও, দীর্ঘদিন তাদের নাম বিদ্যালয়ের ব্যানবেইজ তালিকায় ছিল না।
বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের ব্যানবেইজ জরিপ অনুযায়ী, শিক্ষক ভারতী রানী বিশ্বাস, মাহবুবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, মহিবুল হক, আব্দুস সালাম, রওশন আরা ও সেলিনা আক্তারের নাম সেই তালিকায় অনুপস্থিত ছিল।
তথ্য অনুযায়ী, ভারতী রানী বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, মহিবুল হক ও আব্দুস সালামের নিয়োগ দেখানো হয়েছে ২০০৫ সালে। কিন্তু ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যানবেইজে তাদের কোনো নাম নেই। একইভাবে, ২০১৪ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত মাহবুবুর রহমান, রওশন আরা ও সেলিনা আক্তারের নামও অনুপস্থিত ছিল।
নতুন করে এই ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন,"একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে ব্যাক ডেটে নিয়োগ দেওয়া নীতিহীনতার উদাহরণ। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।"
গত রোববার (১৬ নভেম্বর) সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের সাথে কথা হলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ বলেও দাবি করেন।
কয়েকজন অভিভাবক জানান,"বহু আগে থেকেই দুর্নীতির কথা শুনেছিলাম। পরে দেখি ওই শিক্ষকরা নিয়মিতই দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর কী হয়েছে, জানি না।"
স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা বলছেন,"শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন অনিয়ম ও জালিয়াতি তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে অন্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তা সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।"
এই অভিযোগ প্রথমে ২০২২ সালে আদালতে মামলা আকারে তোলেন বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক আব্দুল কালাম আজাদ, যিনি কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষকতা করতেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক গোলাম সরওয়ার শত্রুতাবশত তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছেন।
আব্দুল কালাম আজাদ বলেন,"যাদের নাম ব্যানবেইজে ছিল না, তারা কীভাবে ব্যাক ডেটে নিয়োগ পেয়ে বেতন পেলেন? আমাকে চাকরিচ্যুত করা ও এই অবৈধ নিয়োগ একই চক্রের অংশ। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে সরওয়ার যা খুশি তাই করেছেন।"
তিনি আরও দাবি করেন,"অভিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের তারিখে যেসব পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।"
স্থানীয় ‘দৈনিক বজ্রপাত’ পত্রিকার ২০১৪ সালের ৩ জানুয়ারির সংখ্যাটি যাচাই করে দেখা গেছে- সেখানে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নেই। অথচ বিজ্ঞপ্তিতে ওই তারিখ ও পত্রিকার নাম রেফারেন্স হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সরওয়ার বলেন, আমি ২০ বছর ধরে বিদ্যালয়ে রয়েছি। আওয়ামী লীগ আমলে আমাকে এই বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এখনও এই বিদ্যালয় নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সেই সাথে অভিযোগের বিষয়ও অস্বীকার করেন তিনি।
মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ খান এনপিবি নিউজকে বলেন,"অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব মো. ইউনুস আলী এনপিবি নিউজকে বলেন," কুষ্টিয়াতে আমি জুলাই মাসে যোগদান করেছে। এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।"
মন্তব্য করুন