

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে ল্যান্ডমাইন ও ভারী বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ বিশেষজ্ঞ দল। রামু সেনানিবাস থেকে আগত ৩৭ সদস্যের ওই দল টানা দুইদিন অভিযান চালিয়ে অন্তত আটটি বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত ও ধ্বংস করে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালিত হয় ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি ও পেয়ারাবুনিয়া সীমান্ত এলাকায়। অভিযানে ১টি ল্যান্ডমাইন, ৩টি গ্রেনেড লঞ্চারের গোলা ও ৪টি মর্টার শেল শনাক্ত ও নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
অভিযানটি নেতৃত্ব দেন রামু সেনানিবাসের অর্ডিন্যান্স মেজর আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তাকে সহায়তা করেন ইঞ্জিনিয়ার কোরের মেজর ফারজানা ও অন্যান্য সদস্যরা।
এ বিষয়ে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম খায়রুল আলম জানান,মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নিজেদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সীমান্ত এলাকায় ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখে, যার কিছু অংশ বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে। এতে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, “বিজিবির টহল এলাকার আশপাশেও মাইন পুঁতে রাখে বিদ্রোহীরা। ফলে সীমান্তে দায়িত্ব পালনরত সদস্যদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় সীমান্ত নিরাপদ রাখতে বিজিবি ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে।”
এর আগে গত ১২ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ৪১ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় টহলের সময় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে বিজিবির নায়েক মো. আক্তার হোসেন গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) প্রদেশের সীমান্তঘেঁষা এলাকায় আরাকান আর্মির একাধিক ছোট ছোট ক্যাম্প রয়েছে। সেখান থেকে সদস্যরা মাঝে মধ্যেই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ঢুকে মাইন পুঁতে রাখে।
বিজিবির অনুরোধে রামু সেনানিবাসের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ওই এলাকায় অভিযানে নামে এবং পুরো অঞ্চল নিরাপদ করে অভিযান শেষ করে। বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তের ওই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নতুন করে বর্ডার আউটপোস্ট (বিওপি) স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা যায় এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সম্ভব হয়।
বিজিবির দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ৩ জন করে এবং ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ জন আহত হয়েছেন। সর্বশেষ ১২ অক্টোবরের ঘটনায় বিজিবির এক সদস্য তার পা হারান।
এছাড়া মঙ্গলবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির পোয়মুহুরী সীমান্তে মিয়ানমারের এক নাগরিক নিহত ও এক বাংলাদেশি আহত হন। এর আগে ২০২৪ সালে টেকনাফের নাফ নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারান।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
