

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


করোনাকালে অতিরিক্ত মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায়ের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া ইমাম আদালতের আদেশে স্বপদে বহাল হলেও বর্তমান ইমামকে তা ছেড়ে দিয়ে বুকে টেনে নিলেন মওলানা মো. আজিজার রহমান।
সেই সাথে ইতি টানলেন তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। ইমামের এমন মহানুভবতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও মুসল্লিরা।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) আসরের নামাজের পর এমন অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে।
জানা যায়, আদালতের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার মওলানা আজিজার রহমানের নেতৃত্বে জুমার নামাজ আদায় করেন মসজিদের বর্তমান ইমাম মুফতি ওমর ফারুক রহমানি, কর্তৃপক্ষ ও মুসল্লিরা। পরে আসরের নামাজও আদায় করেন তিনি।
কিন্তু নামাজ শেষেই ঘটে বিরল এক দৃশ্য। মুফতি ওমর ফারুক রহমানি, মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিদের নিয়ে বসেন প্রবীণ এ আলেম। সেখানেই সন্তানতুল্য ওমর ফারুককে ইমামের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। ইমামের এমন মহত্ত্বে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
তারা বলেন, এমন দৃশ্য সমাজে বিরল। আর এটাই ইসলামের তো সৌন্দর্য। পরে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা এবং মুসল্লিরা ফুলের তোড়া উপহার দেন ৩২ বছর ধরে করে আসা বিদায়ী এ ইমামকে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এপ্রিল। করোনা প্যান্ডেমিক তখন তুঙ্গে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় জারি করে জুমার নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ১০ এবং অন্যান্য নামাজে ৫ জন নামাজ আদায়ের নির্দেশন। আদেশ জারির পর থেকে নিয়ম মেনে চলছিল নামাজ।
১৭ এপ্রিল, শুক্রবার। হঠাৎ বাদ সাধেন মুসল্লিরা। জুমার খুতবার পর মুয়াজ্জিন ও অন্যান্য মুসল্লিসহ ১০ জন নিয়েই নামাজ শুরু করেন প্রখ্যাত এ আলেম।
পরে মসজিদের পাশাপাশি থাকা মুসল্লিরা দৌঁড়ে এসে পিছনে দাঁড়িয়ে যান কাতারে। তাদের দায় এসে পড়ে এই ইমামের ওপর। কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ কিংবা আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে ১৯ এপ্রিল বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায় মনে ব্যথা পান তিনি।
পরে ২০২০ সালের ২৩ জুন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মামলা করেন। শুনানি শেষে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই বেতনসহ ইমামকে স্বপদে বহাল রাখার আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ জুলাই জেলা জজ আদালতে আপীল করেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
যার মিস আপীল নম্বর: ১১/২০২০। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২৭ অক্টোবর মসজিদ কর্তৃপক্ষের মিস আপীল না-মঞ্জুর করে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের দেওয়া ওই রায় বহাল রাখেন আদালত।
মন্তব্য করুন
