

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


পুরো গ্রাম শোকের ছায়ায় ঢেকে গেছে। একসঙ্গে চার শিশুর মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ অভিভূত।
মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের চার বোন বিকেলে পাশ্ববর্তী মসুরি ভাজা বিলে শাপলা ফুল তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যান। নিহতরা হলেন—ফাতেমা, মিম, আফিয়া ও আলসিয়া।
রাত ১০টায় জানাজার নামাজের পর চার বোনকে একই কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হয়। জানাজার নামাজে অংশ নেন নিহতদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
রাজনগর মল্লিকপাড়া স্কুল মাঠে রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে ইমামতি করেন জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজউদ্দীন খান। মরদেহগুলি একে একে তাদের বাড়ি থেকে খাটিয়ায় তুলে আনা হয় এবং জানাজার পর একই সাথে দাফন করা হয়। দাফনে অংশ নেওয়া অনেক মুসল্লি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কবর খোঁড়ার কাজে অংশ নেওয়া রাজনগর গ্রামের আয়ুব আলী এনপিবি নিউজকে বলেন, “৬৫ বছর বয়সে এই প্রথম একসঙ্গে চার কবর খোঁড়ার কাজ করলাম। এর আগে গ্রামে এমন ঘটনা দেখিনি।”
জানাজার আগে নিহত ফাতেমার পিতা আব্দুস সামাদ কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, “আমার দুই মেয়েকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন। আপনারা আমার মেয়েদের জন্য দোয়া করবেন।” নিহত মিমের পিতা ইসাহাক আলী মেয়ের জন্য দোয়া চেয়ে আর কোনো কথা বলতে পারেননি।
দাফনে অংশ নেওয়া মোমিনপুর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আফিয়া ও মিম বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। নিয়মিত নামাজ আদায় করত। তাদের হারিয়ে পুরো বিদ্যালয় শোকাহত।”
নিহত চার শিশুর মধ্যে ফাতেমা ও মিম অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আফিয়া ও আলসিয়া চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। পরিবার জানায়, শনিবার দুপুরে তারা একসাথে শাপলা তুলতে মসুরি ভাজা বিলে যায়। বিকেল হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসী তাদের পানিতে খুঁজে বের করে। মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় গভীর শোক নেমে আসে। সাবেক এমপি ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদ অরুন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড: কামরুল হাসান এবং জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজউদ্দীন খান নিহতের পরিবারকে শোক জানান।
গ্রামবাসীরা বলেন, “ওরা প্রতিদিন বিকেলে বিলের পাশে খেলতে যেত। আজও ফুল তুলতে গিয়েছিল। কেউ ভাবেনি, একসাথে চার বোনের মৃত্যু এমন মর্মান্তিক হবে।”
মন্তব্য করুন