শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গলাচিপায় বিএনপি–গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষে আহত ৩১

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
সংঘর্ষের পর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়: ছবি-সংগৃহীত
expand
সংঘর্ষের পর আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়: ছবি-সংগৃহীত

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের চরশিবা এলাকায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনের চৌরাস্তায় এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের নারীসহ অন্তত ৩১ জন আহত হন।

স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহতরা গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে উভয় দলের আহত নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে গিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। তিনি বলেন, “ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সবাইকে সংযত থাকতে হবে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণঅধিকার পরিষদের একটি সভা চলছিল। একই সময়ে ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির একটি শুভেচ্ছা মিছিল শেষ করে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

আহতদের মধ্যে বিএনপিপন্থিদের মধ্যে রয়েছেন চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ী, সদস্য সবুজ রাঢ়ী, নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী ও সলেমান রাঢ়ী। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের আহতদের মধ্যে আছেন যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খলিফা, আজমির খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা।

বিএনপি নেতা ইলিয়াস রাঢ়ীর অভিযোগ, “আমরা মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার সময় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা বলে, হাসান মামুন নমিনেশন পাবে না, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরকেই দেওয়া হয়েছে।”

গণঅধিকার পরিষদের যুব নেতা সোহেল খলিফা বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এতে আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি।”

অন্যদিকে আহত আজমিরের মা আমেনা বেগম বলেন, “আমার ছেলে মোটরসাইকেল চালক। সে সভা শেষে বাসায় ফেরার পথে বিএনপির লোকজন তাকে ধরে মারধর করে। আমি ছেলেকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও মারে।”

জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। তবে পটুয়াখালী–৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসনে প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়। এ নিয়ে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তীব্র বাকবিতণ্ডাও হয়।

স্থানীয়দের ধারণা, আসনটি কারা পাবে—বিএনপির হাসান মামুন না জোটের প্রার্থী গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর—এ নিয়ে উভয় দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, “আমরা ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে সভা করছিলাম। মিছিল শেষে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে।”

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন