

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এক ফেরিওয়ালাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক মো. সোলায়মানের বাধার মুখে পড়েন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেনপাড়া এলাকায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাতে মহিপুর থানায় পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত কার্যত ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
ভুক্তভোগী মো. নান্না শেখ (৬০) পেশায় ফেরিওয়ালা। তিনি প্রতিদিনের মতো কাপড় বিক্রির উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় গেলে স্থানীয় বেল্লাল (২৬) ও আরও কয়েকজন যুবক তাঁকে ডেকে ঘরে বসান। পরে কাপড় দেখানোর কথা বলে ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁর গাট্টিতে একটি মোবাইল ফোন রেখে চুরির অভিযোগ তোলেন এবং এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
নান্না শেখ অভিযোগ করেন, ‘তারা আমার কাপড়ের গাট্টি টানাটানি করে, চোর বলে মারধর করে। এ সময় লুঙ্গির কোচে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।’ পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় নান্না শেখকে তুলাতলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন।
এদিকে ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক সোলেমানের বাধার মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। তিনি হামলাকারীদের আত্মীয়।
দেশ রূপান্তর কুয়াকাটা প্রতিনিধি কেএম বাচ্চু বলেন, ‘আমরা ভিডিও ধারণ করছিলাম, তখন সোলেমান এসে বলেন— “ওরা আমার আত্মীয়, আপনারা ভিডিও করবেন না, নিউজও করবেন না।” পরে দেখি, তিনি আমার নাম জড়িয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেছেন।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা পোস্ট প্রতিনিধি এস. এম. আলমাস বলেন, ‘সোলেমান এসে বলেন, বিষয়টি তিনি মীমাংসা করবেন, আমাদের চলে যেতে বলেন।’
পরে সোলেমান তাঁর ফেসবুক পেজে সাংবাদিকদের ভিডিও আপলোড করে ‘চাঁদাবাজ সাংবাদিক’ বলে প্রচার করেন, যা নিয়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত বেল্লালের মা বিলকিস বেগম বলেন, ‘সাংবাদিকরা এসেছিলেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে আমার টাকা-পয়সার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। কে কী বলেছে, জানি না।’
এ বিষয়ে যুবদল নেতা মো. সোলায়মান বলেন, 'ঘটনাস্থলে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তার কোনো প্রমাণ আমার কাছে নেই। আমি ভুল করেছি। এখন ফেইসবুকের মাধ্যমে আবার সংশোধন করতেছি।’
লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনাটি নিন্দনীয়। এটি সোলেমানের ব্যক্তিগত আচরণ, দলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সাংবাদিকরা সমাজের আয়না—তাদের সঙ্গে এমন আচরণ কাম্য নয়।’
মহিপুর থানা যুবদলের সভাপতি সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ‘সঠিক তথ্য যাচাই না করে সাংবাদিকদের জড়িয়ে ভিডিও প্রকাশ করা উচিত হয়নি। দোষী প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ফেরিওয়ালাকে মারধর এবং সাংবাদিকদের হেনস্তা বিষয়ে পৃথক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন