

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে দখলদারিত্ব নাই, প্রতিহিংস্যা নাই। বিএনপি সকল ধর্মের প্রতি সন্মান দেখিয়ে আজকে প্রেসিডেন্ট জিয়ার রাজনীতির দর্শনটাকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং পরামর্শে রাজনীতি করছে। তারেক রহমান লন্ডনে বসে সকলকে একত্রিত করছেন, সকলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সকল সম্প্রদায়ের সঙ্গে তিনি একটা সুন্দর সম্পর্ক রেখে আজকে নতুন একটা বাংলাদেশ গড়ার জন্য এগিয়ে আসছেন। তারেক জিয়ার মার্কা ধানের শীষ, তার মার্কাকে জিতিয়ে আনবো। এ ধানের শীষ নিয়েই ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদেরকে লড়তে হবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ গ্রামে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ্যানি বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কেন তাকে বার বার জেলে নিয়ে রাখতে হবে? কেন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করতে হবে? এমন জায়গায় তাকে রেখেছে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে যাওয়া আসার মধ্যে আছে। তারপরও বেঁচে আছেন সন্মানের জায়গায়, শ্রদ্ধার জায়গায়। খালেদা জিয়া আমাদের মনোবল, আমাদের সাহস। ওই প্রেরণা থেকেই আজকে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যটা সুদৃঢ় ঐক্য। এ ঐক্যের মধ্যে থাকলে কেউ কোন সম্প্রদায়ের কাউকে আঘাত করার সুযোগ পাবে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, তারেক রহমান খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন, আগে আমাদের বিএনপি নেতাদের সজাগ এবং সতর্ক হতে হবে।আমরা ইতোমধ্যে সতর্ক হয়েছি, দায়িত্ব নিয়েছি। কেউ যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে, কোন ব্যক্তিগত ফায়দা নিতে চায়, অপকর্ম করার চেষ্টা করে, তাকে বিএনপিতে রাখার কোন সুযোগ নেই। সে ব্যক্তির বিএনপি করারও কোন সুযোগ থাকবে না। আমরা এ সমাজে একসঙ্গে বসবাস করছি। একটা ভূখণ্ডের মধ্যে আছি। এ ভূখণ্ডের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষে যারা বসবাস করি, তারা বাংলাদেশী। কেউ মুসলমান, কেই হিন্দু সম্প্রদায়ের, কেউ বৌদ্ধ, কেউ খ্রিস্টান, পাহাড়ী, মারমা, চাকমা, লং, মগ, আদিবাসী সবাইতো আছে। সবাই বসবাস করতেছি। সব ধর্মের মানুষকে সন্মানের জায়গায় আমরা রেখেছি। এটা জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন।
বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে কোন হানাহানি নাই, মারামারি নাই। কাটাকাটি নাই, লুটপাট নাই। ফ্যাসিবাদি কোন শাসন নাই। ফ্যাসিস্ট ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কোন সুযোগ নাই। স্বৈরাচারী মনোভাবের কোন লক্ষণ নাই। কর্তৃত্ববাদি, হুমকি-ধামকি, নেতাগিরি, মোড়লগিরি- বিএনপির রাজনীতিতে নাই। ভবিষ্যতে এটা থাকার কোন সুযোগ নেই।
এ্যানি চৌধুরী বলেন, মানুষ বুঝে গেছে, তারেক জিয়া ছাড়া এদেশে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অন্যকোন নেতা আর নাই। তারেক রহমানই সবাইকে একটা জায়গায় এনেছেন, তারেক রহমানই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। এ ঐক্যটা ইস্পাত কঠিন সুদৃঢ় ঐক্য। এ ঐক্য ভাঙার ক্ষমতা কারো নাই। এ জন্য তারেক রহমানের হাতকে আমরা এখন থেকে শক্তিশালী করবো। আমাদের অসম্প্রদায়িক লক্ষ্মীপুর, অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। এটাকে নিয়ে আমরা চলতে চাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটা ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচিত হলো। ওই ধারাবাহিকতায় অগণতান্ত্রিকভাবে রেখেই ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ তারা পার করেছে। একটা দখলদারিত্ব, দেশে কোন স্বাভাবিক শাসন ছিল না। ফ্যাসিবাদি কোন শাসন এবং কর্তৃত্ববাদি শাসন দিয়েই তারা মানুষকে জিম্মি করে দখলদারিত্বের রাজনীতি করেছে এবং দেশ পরিচালনা করেছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি, প্রতিরোধ করেছি।
বলেন, হাসিনা জনশত্রু, গণশত্রু, হিন্দুদের শত্রু, মুসলমানের শত্রু, খ্রিস্টানদের শত্রু, বৌদ্ধদের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তাহলে একটা দলের নেত্রী পালিয়ে যেতে হবে কেন? তিনি তো প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঐতিহ্য ছিল। পালিয়ে গেল কেন? পালিয়ে গেছে এ কারণে- দেশে থাকার মতো কোন অবস্থা তারা রাখে নাই।আমার আর আপনার ট্যাক্সের টাকা লুণ্ঠন করেছে। বিদেশে পাচার করেছে। তাদের মুষ্টিমেয় কিছু লোক প্রচুর অর্থকড়ির মালিক হয়েছেন। যাদেরকে দিয়ে তারা নিয়ন্ত্রণ করাইতেন, দেশকে, মানুষকে, যাদেরকে দিয়ে জিম্মি করে ভোট নিতেন, তারা সমাজে অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। জায়গাজমি পর্যন্ত দখল করেছে।
বাঙ্গাখাঁ রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রমের সভাপতি বাবু নান্টু কর্মকারের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি ডা. রত্ন দ্বীপ পাল, জেলা ওলামা দলের সভাপতি শাহ মো. এমরান, সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ এমরান ও যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শিমুল সাহা প্রমুখ।
মন্তব্য করুন