বৃহস্পতিবার
২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক শিক্ষাই মানুষের স্থায়ী পরিবর্তন আনে: আজহারী

সীতাকুণ্ড(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
ড. মিজানুর রহমান আজহারী
expand
ড. মিজানুর রহমান আজহারী

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) আয়োজিত ‘রাসুল (সা.)এর শিক্ষাদান পদ্ধতি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসের হল রুমে এ আয়োজন করা হয়েছে।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. মিজানুর রহমান আজহারী।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আ ন ম শামসুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করা হয়। সেমিনারে মনোমুগ্ধকর ইসলামি সংগীত পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ শিল্পীগোষ্ঠী। সঞ্চালনা করেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের পরিচালক মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ এবং অতিরিক্ত পরিচালক চৌধুরী গোলাম মাওলা।

বক্তব্যে ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সভ্যতা, সমতা ও জীবনবোধ শিখিয়েছেন। তিনি শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন এবং জ্ঞানার্জনকে বাধ্যতামূলক করেছিলেন। নবীজির শিক্ষাদানে ছিল দুই ধরণের পদ্ধতি—প্রাইভেট লার্নিং সেশন ও পাবলিক লার্নিং সেশন। তিনি ওয়ান-টু-ওয়ান শেখাতেন, আবার বহু সাহাবাকে একসঙ্গে পাঠদান করতেন। মসজিদের খুৎবা ছিল তাঁর পাবলিক লার্নিং সেশন।

তিনি বলেন, রাসুল (সা.) শুধু হালাল–হারাম বলেই সীমাবদ্ধ থাকতেন না; বরং কেন কিছু হালাল বা হারাম তার যুক্তি, কারণ ও প্রজ্ঞা তিনি বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দিতেন। তাঁর শিক্ষা ছিল আবেগ ও মানসিক অবস্থা বুঝে দেওয়া শিক্ষা—ভালোবাসা, নম্রতা ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমে।

ড. আজহারী আরও বলেন, নবীজি (সা.) মানুষের চরিত্রগঠন, নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ এবং আত্মশুদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তিনি কাউকে চাপিয়ে শিক্ষা দিতেন না; বরং ভালোবাসার মাধ্যমে সত্যকে মানুষের হৃদয়ে স্থাপন করতেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক শিক্ষাই মানুষের অন্তরে স্থায়ী পরিবর্তন আনে। নিজেদের জীবনে নবীজির শিক্ষা প্রয়োগ করলে তোমরা সমাজ, দেশ ও উম্মাহর জন্য কল্যাণকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

তিনি অহংকার সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করে বলেন, অহংকার মানে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা।বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, আইআইইউসি উম্মাহর সম্পদ, এটিকে সুন্দরভাবে সমৃদ্ধ করতে হবে।তিনি বলেন, ড. আজহারীর আলোচনা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও নৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, আইআইইউসির মূল থিম ‘Combined Quality, Youth, Morality’—এই ভিত্তিতে এমন মানুষ তৈরি করা হচ্ছে যারা শুধু একাডেমিকভাবে নয়, নৈতিকতা ও মানসিক বিকাশেও সমৃদ্ধ হবে এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করবে। তিনি বলেন, দুনিয়ার সফলতা চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। প্রকৃত সফলতা হলো আখেরাতমুখী হওয়া, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ অর্জন করা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন