শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণ মাফিয়াদের হাতে

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:১০ এএম
চট্টগ্রামের কালুর ঘাট এলাকা ফাইল ছবি
expand
চট্টগ্রামের কালুর ঘাট এলাকা ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরের বহু শ্রমজীবী মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ডুব দিয়ে ও দেশীয় যন্ত্র ব্যবহার করে বালু সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তবে সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে ছোট নৌকা ও শ্রমিকভিত্তিক বালু তোলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কয়েকশ পরিবার আয়হীন হয়ে চরম দুরবস্থায় পড়েছে।

অন্যদিকে নদীর পূর্ব তীরসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রেজারের মাধ্যমে প্রভাবশালী মহল এখনও নির্বিঘ্নে বালু তুলছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

শ্রমিকদের জীবিকা সংকট কালুরঘাট এলাকায় আগে ছোট ছোট ২০–২৫টি বালুর সাইট ছিল। ভোলা, বরিশাল, কুমিল্লা, চকরিয়া ও স্থানীয় এলাকার বহু শ্রমিক নৌকা ডুবিয়ে বা ছোট যন্ত্র দিয়ে বালু তুলতেন। একটি নৌকা ভর্তি করতে একজন শ্রমিককে শত শতবার ডুব দিতে হতো। সারাদিনের কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে আয় হতো ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

ড্রেজার চালু হওয়ার পর থেকে এই ঐতিহ্যবাহী শ্রম নির্ভর পদ্ধতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে হাজারো শ্রমজীবী মানুষ কাজ হারিয়ে অন্য উপার্জনের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না।

পুলিশের অভিযান ও বিতর্ক কিছুদিন আগে কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মৌখিক নির্দেশে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক অভিযানে আলমগীর কোম্পানি নামের এক ব্যবসায়ীর নৌকা জব্দ ও দুইজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এরপর থেকে ভয়ে সব সাইটের কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে।

তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, আসল উদ্দেশ্য হলো প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া। তাদের দাবি, যেসব চরে শ্রমিকরা যেতে পারছেন না, সেখান থেকেই ড্রেজার বসিয়ে প্রতিদিন বড় বড় নৌকা ভর্তি করে বালু তোলা হচ্ছে।

নিয়ন্ত্রণ কার হাতে

স্থানীয়দের মতে, একসময় এসব ব্যবসা আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বর্তমানে তা বিএনপির ঘনিষ্ঠ মহলের হাতে চলে গেছে। রাজনৈতিক অভিভাবকত্ব ছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীদের টিকতে না পারায় ছোট উদ্যোক্তা ও শ্রমজীবীরা কার্যত বিতাড়িত হয়েছেন।

পুলিশের অবস্থান চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবির জানান, বালু ও মাটি উত্তোলন আইনত অবৈধ। তাই এই ব্যবসা বন্ধ করা হয়েছে এবং একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্য এলাকায় কেউ এ ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে কিনা, তা তাঁর জানা নেই বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন