

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইসরাইলের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারন হাসকেল সম্প্রতি ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য ও ব্রিটেনবিরোধী মন্তব্যের কারণে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দল থেকে আলাদা হয়ে গঠিত ‘নিউ হোপ পার্টি’র সদস্য হাসকেলকে এখন দেশটির অন্যতম বিতর্কিত রাজনৈতিক মুখ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মিডলইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে এক ইহুদি উপাসনালয়ে হামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক জানাতে সেখানে যান শ্যারন হাসকেল।
সে সময় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, আমি একজন ইহুদি নারী হিসেবে ব্রিটেনের রাস্তায় নিরাপদ নই। শুধু আমার অস্তিত্বের কারণেই আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
পরদিন ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, অতিরিক্ত অভিবাসন, বিশেষ করে ইসলামপন্থী দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীরা-ব্রিটেনের সামাজিক মূল্যবোধকে নষ্ট করছে এবং ইহুদিবিদ্বেষ বাড়াচ্ছে।
তার এই বক্তব্যকে যুক্তরাজ্যের মুসলিম সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীরা স্পষ্ট ইসলামবিদ্বেষী বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
এ বছর শুরুর দিকে হাসকেল এক ব্রিটিশ সংসদীয় প্রতিনিধি দলের বৈঠকে গোপনে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ওই ভিডিওতে তিনি ব্রিটিশ এমপি এমিলি থর্নবেরিকে পশ্চিম তীরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তীব্রভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
ভিডিওটি প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের সংসদীয় পররাষ্ট্র কমিটি একে “কূটনৈতিক আচরণবিধি লঙ্ঘন” বলে নিন্দা জানায়।
ফিলিস্তিন নিয়ে শ্যারন হাসকেলের বক্তব্য বহুবার সমালোচিত হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, শান্তি তখনই সম্ভব, যখন ফিলিস্তিনিরা আমাদের ঘৃণা করার চেয়ে তাদের সন্তানদের ভালোবাসবে।
গাজার যুদ্ধে শিশুহত্যার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে হাসকেল বলেন, এগুলো হামাসের প্রচারণা। কোনো যুদ্ধেই শিশু নিহত হওয়া নতুন কিছু নয়।
অগাস্টে দক্ষিণ সুদান সফরকালে তিনি গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের ওই দেশে স্থানান্তরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়। তবে হাসকেল দাবি করেন, সফরটি ছিল মানবিক সহায়তা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের অংশ।
সম্প্রতি হাসকেল ও ইসরাইলি মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য ইউরোপীয় চরম-ডানপন্থী ও অভিবাসনবিরোধী গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে ইসরাইলের প্রবাস বিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি উগ্র-ডানপন্থী ব্রিটিশ কর্মী টমি রবিনসনকে ইসরাইল সফরে আমন্ত্রণ জানান, যা নিয়ে ইসরাইল ও ব্রিটেন উভয় দেশেই ক্ষোভ দেখা দেয়।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী ইহুদি সংগঠন বোর্ড অব ডেপুটিজ অব ব্রিটিশ জিউস ও জিউইশ লিডারশিপ কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলে, একজন দণ্ডিত উগ্রবাদীকে আমন্ত্রণ জানানো আমাদের সমাজে সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এইসব বিতর্কের ফলে শ্যারন হাসকেল এখন শুধু ফিলিস্তিন প্রশ্নেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ইসরাইলের উগ্র জাতীয়তাবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র: মিডলইস্ট আইয়
মন্তব্য করুন
