পাকিস্তানের নারীদের জন্য চালু করল অনলাইন ‘জিহাদি কোর্স’

পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ (Jaish-e-Mohammed), যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে, এবার নারীদের লক্ষ্য করে নতুন একটি অনলাইন কোর্স চালু করেছে। কোর্সটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘তুফাতুল মুমিনাত’, যার মাধ্যমে মূলত নারী সদস্য সংগ্রহ ও তহবিল বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আগামী ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এই অনলাইন কোর্সের মেয়াদ প্রতিদিন প্রায় ৪০ মিনিট করে। পাঠদান করবেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহারের দুই বোন—সাদিয়া আজহার ও সমাইরা আজহার। এতে নারীদের ইসলাম ও জিহাদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করা হবে এবং সংগঠনের নারী শাখা ‘জামাতুল মুমিনাত’-এ যোগদানে উৎসাহিত করা হবে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সাদিয়া আজহারকে সংগঠনের নারী ইউনিটের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে। তার স্বামী ইউসুফ আজহার সম্প্রতি পাকিস্তানের বাহাউলপুরে বিমান হামলায় নিহত হন। হামলাটি হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে।

কোর্স পরিচালনায় আরও যুক্ত হচ্ছেন উমার ফারুকের স্ত্রী আফরির ফারুক, যিনি পেহেলগাম হামলার অন্যতম হামলাকারীর সহধর্মিণী।

কোর্সে অংশ নিতে হলে প্রতি শিক্ষার্থীকে ৫০০ পাকিস্তানি রুপি ফি দিতে হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে এবং অংশগ্রহণকারীদের একটি বিস্তারিত তথ্যফর্ম পূরণ করতে হবে। অনলাইন কোর্স আয়োজনের অন্যতম কারণ হলো, পাকিস্তানে নারীদের একা বাইরে যাওয়া এখনও সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে ধরা হয়।

জইশ-ই-মহম্মদ গত ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নারী শাখা গঠনের ঘোষণা দেয়। এর ঠিক ১১ দিন পর, ১৯ অক্টোবর, পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ‘দুখতারান-ই-ইসলাম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই নারীবিষয়ক কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই কোর্সের মাধ্যমে জইশ-ই-মহম্মদ নারীদের সংগঠনের কাঠামোয় যুক্ত করার পাশাপাশি অর্থ সংগ্রহ ও আদর্শিক প্রভাব বিস্তারের নতুন কৌশল নিচ্ছে। এটি পাকিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়ার নতুন ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।